আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার বাংলাদেশের অনুকূলে ছাড় করেছে। বাংলাদেশ সময় বুধবার রাতে আইএমএফ থেকে এ অর্থ ছাড় করা হয়।
বৃৃহস্পতিবার বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ওই অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৬৯ কোটি ডলারে। এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ২১৯ কোটি ডলার।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরাও দ্রুত ঋণ চেয়েছি। আইএমএফও দ্রুত ছাড় করে দিয়েছে। এই ঋণ পাওয়ার ফলে অন্যান্য সংস্থা থেকেও দ্রুত ঋণ পাওয়া যাবে। ফলে দেশে ডলারের জোগান বাড়বে, সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করতে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত ৯টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের সভায় বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলার জন্য গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশ আইএমএফ-এর কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। এর আলোকে গত বছরের ২৬ অক্টোবর আইএমএফ বাংলাদেশে আসে। তারা ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে ঋণবিষয়ক আলোচনা করে শর্তের বিষয়গুলোর কাঠামো তৈরি করে। এরপর এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করার জন্য সংস্থাটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিসেস অ্যান্তইনেত এম সায়েহ ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন। তিনি ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে ঋণ আলোচনাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসেন। ইতোমধ্যে আইএমএফ-এর ঋণ পেতে প্রাম্ভিক প্রধান শর্তগুলো সরকার বাস্তবায়ন করেছে। তাদের শর্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভর্তুকি কমাতে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম আরও এক দফা বাড়ানো হতে পারে। ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ ও সংস্কারের বিষয়ে দেওয়া শর্তগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে।