প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপর চার আসামির দুই বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আজ সোমবার এই রায় দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইনজীবী আবদুর রব।
রায়ে আদালত বলেছেন, পাঁচ আসামির প্রত্যেকে সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অপরাধ সংঘটিত করেছেন। তাই প্রত্যেককে দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হলো। এ ছাড়া প্রত্যেককে ২ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হলো।
হেলেনা জাহাঙ্গীর ছাড়া দণ্ডিত অপর চার আসামি হলেন জয়যাত্রা টিভির মহাব্যবস্থাপক হাজেরা খাতুন, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান, সমন্বয়ক সানাউল্ল্যাহ নূরী ও নিজস্ব প্রতিবেদক মাহফুজ শাহরিয়ার।
রায় ঘোষণার সময় হেলেনা জাহাঙ্গীর ও হাজেরা খাতুন আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আইনের দৃষ্টিতে তাঁরা পলাতক হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। আদালতে উপস্থিত বাকি তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ২ আগস্ট জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি দাবি করা আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজনকে আসামি করে পল্লবী থানায় প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর তাঁর মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশনে ভোলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ার নামে বাদীর (আবদুর রহমান) কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি জয়যাত্রা টেলিভিশনে কয়েক মাস কাজ করেছেন। প্রতি মাসে তাঁর কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নিয়েছে জয়যাত্রা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।
মামলায় ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
আদালত গত বছরের ২২ এপ্রিল হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অভিযোগে ২০২১ সালের ২৯ জুলাই হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। সে সময় তাঁর গুলশানের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ক্যাসিনো সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি ও বিদেশি ছুরি উদ্ধার করা হয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। পরে রাজধানীর মিরপুরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশন ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনে অভিযান চালানো হয়।
হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠন করে আলোচনায় এসেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি ২০২১ সালের নভেম্বরে জামিনে মুক্তি পান।