ইউরোপে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৪শে জুলাই সন্ধ্যায় ইতালির রাজধানী রোমের অভিজাত এক হোটেলে সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনায় ওই অঞ্চলের ১৩ জন রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছে। একাধিক রাষ্ট্রদূত সেগুনবাগিচার এমন নির্দেশনা পাওয়ার কথা মানবজমিনের কাছে স্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, সরকার প্রধানের আগ্রহের প্রেক্ষিতে ২৪শে জুলাই সন্ধ্যার আগে তাদের রোমে পৌঁছার প্রস্তুতি রাখতে মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে লিখিত নির্দেশনা পাওয়ার আশা করছেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ২৩শে জুলাই থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘ ফুড সিস্টেম সামিটে অংশ নিতে রোম যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সম্মেলনের উদ্বোধনীতে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বন্ধু রাষ্ট্র ইতালির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। সেই সুযোগে ওই অঞ্চলে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের জরুরি নির্দেশনা দিবেন। আগামী ২৪-২৬শে জুলাই রোমের এফএও হেড কোয়ার্টারে ইউএন ফুড সিস্টেম স্টকটেকিং সামিট অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণের গুরুত্ব বর্ণনায় সরকারের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সম্মেলনে ৬/৭টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিভিল সোসাইটি এবং এনজিও ব্যক্তিত্বরা অংশ নিচ্ছেন।
এটি এমন একটি বৈশ্বিক ফোরাম যেখানে বাংলাদেশ তার খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত অর্জনগুলো তুলে ধরতে পারে। ওই শীর্ষ সম্মেলনে কতোজন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান অংশ নিচ্ছেন? জানতে চাইলে এক কর্মকর্তা বলেন, কতোজন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান কিংবা হাইপ্রোফাইল কারা অংশ নিচ্ছেন সেটি মুখ্য নয়। বরং সেই গুরুত্বপূর্ণ ফোরামে বাংলাদেশ কি বলছে তা-ই বিবেচ্য। কারণ খাদ্য নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশের অনেক কিছু বলার রয়েছে। করোনা চলাকালে অর্থাৎ ২০২১ সালে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈশ্বিক খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়েছিলেন এবং সেখানে উত্থাপিত বাংলাদেশের অর্জনগুলো রেফারেন্স হিসেবে অনেক দেশ উল্লেখ করে দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ২০২১ সালের পর বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। যা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার সুযোগ এটি। তাছাড়া ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্পিকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে যথাযথ মর্যাদায় রাখা হয়েছে। বহুপক্ষীয় ওই আয়োজনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন জানিয়ে সেগুনবাগিচা বলছে, সেখানে জ্বালানি, অভিবাসন, আইসিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হবে। এসব খাতে অন্তত ৬টি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বা সমঝোতা সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত অভিবাসনকে উৎসাহিত করছে ইতালি। সেই সঙ্গে তারা অনিয়মিত বা অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে চায়। সরকার প্রধানের সফরে এ নিয়েও আলোচনা হবে। ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ইতালি সফর করেন। সেই সফরে অভিবাসন ছাড়াও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছিল।