নির্বাচন কমিশন (ইসি) যৌক্তিক কোনো কারণে কারও প্রার্থিতা বাতিল করলে আওয়ামী লীগের কিছু বলার নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। যৌক্তিক কোনো কারণে সে রকম (প্রার্থিতা বাতিল) কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমাদের কিছু বলার নেই।’
আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চান উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী কিংবা প্রার্থীর সহযোগী সহিংসতায় জড়ালে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিলে আমরা সমর্থন করব।’
গত দুই দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর বোমা হামলা হয়েছে। একজন মারাও গেছেন। যেখানে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাওয়া হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করছে। তদন্তে যে অপরাধী হবেন, তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মতে, যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে, দেশের জনগণ তাদের বর্জন করতে শুরু করেছে। আসন্ন নির্বাচনে ভোটারদের ভালো উপস্থিতি থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খাজনা দেবে না, ট্যাক্স দেবে না, ইউটিলিটি বিল দেবে না। তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। ট্যাক্স না দিলে জেলে যেতে হবে। ইউটিলিটি বিল না দিলে শাস্তি হবে। বিদ্যুতের বিল না দিলে লাইন কাটা যাবে। পানির বিল না দিলে পানির লাইন কাটে দেওয়া হবে। খাজনা, ট্যাক্স না দিলে শাস্তি পেতে হবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে দলের লোকদের নিষেধ করছেন, আঙুল ফুলে অনেকেই কলাগাছ আগেই হয়ে গেছে। এদের অনেকেরই ব্যাংকে লেনদেন আছে।
কাজেই তারেক রহমানের (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) ডাক শুনতে গেলে তাদের নিজের সব যাবে। আমও যাবে, ছালাও যাবে। কাজেই তারেকের ডাকে তারা সাড়া দেবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
বড়দিনের ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ভারতে গেছেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ১/১১ সরকারের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে, কিন্তু এ দেশে আর ১/১১ হবে না। কোনো সুযোগ নেই।’
ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন ও রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার পক্ষপাতি নয় বলেও উল্লেখ করেন সেতুমন্ত্রী।
বিভিন্ন টক শো, গোলটেবিল, সভা-সমাবেশে নাগরিক সমাজের কেউ কেউ আশঙ্কা জানাচ্ছেন, নির্বাচনের পর দেশে একধরনের সংকট তৈরি হবে। এ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘থাক না। এটাও শত ফুল ফুটবে, শত কথা আসবে। এটাও রাজনীতির আরেকটা সংস্কৃতি, আরেকটা সৌন্দর্য।
আমি এটাকে খারাপভাবে দেখতে চাই না। যার যা বলার বলুক, আওয়ামী লীগের একটা স্পষ্ট লক্ষ্য আছে, শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা আছে, আমরা আমাদের লক্ষ্য অভিমুখী অভিযাত্রা অব্যাহত রাখব।’