দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের মানুষকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র নৌকা মার্কা ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের উন্নতি হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় তারাগঞ্জ ওয়াক্ফ এস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বাসসের খবরে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টার দিকে বাণিজ্যিক একটি ফ্লাইটে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তারপর সড়কপথে তারাগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ছোট বোন শেখ রেহানাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উত্তরবঙ্গ মঙ্গাপীড়িত থেকে মুক্তি পেয়েছে। মঙ্গা থেকে মুক্তি পেয়ে এখন উন্নয়নের সুফল সুবাতাস বইছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে চিকিৎসা সেবা দোরগোড়ায় পৌঁছেছে, মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোবাইল ফোন যাতে সবার হাতে পৌঁছায়, সেটা উন্মুক্ত করেছি। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করেছি। আমরা বিনা পয়সায় বই দিই। প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিয়ে থাকি। গবেষণার জন্য টাকা দিই। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করা, প্রযুক্তির শিক্ষা দেওয়া সব ধরনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মা–বাবাকে আর টাকা খরচ করে বই কিনতে হয় না। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন সব জায়গা করে দিচ্ছি, ৫৬২টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করেছি। মন্দির, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মের উন্নয়নে কাজ করছি।’
বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাঁদের ঘরবাড়ি, জমি নেই, তাঁদের দুই কাঠা জমিসহ ঘরবাড়ি করে দিচ্ছি। ৩৩টি জেলা ভূমিহীন গৃহহীন হয়েছে। তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জে কোনো গৃহহীন নেই। কৃষক লীগের নেতাদের দিয়ে প্রত্যেক উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যন্ত আমরা তথ্য নিয়ে ঘর করে দিচ্ছি। চাল, ডাল, তেল ভর্তুকি মূল্যে কেনার সুযোগ করে দিয়েছি। এসব হয়েছে আপনারা নৌকা মার্কা ভোট দিয়েছেন বলে। আমরা আপনাদের সেবা দিচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে তারাগঞ্জে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তারাগঞ্জ ওয়াক্ফ এস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে পথসভা মঞ্চে উঠলে নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হাত উঁচিয়ে অভিবাদন জানান। এরপর দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য শুরু করেন।
তারাগঞ্জের পথসভায় বক্তব্য শেষে পীরগঞ্জের জনসভায় যাওয়ার পথে মিঠাপুকুরের উপজেলায় একটি নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জে তাঁর শ্বশুরবাড়ি জয় সদনে যাবেন। সেখানে তিনি তাঁর প্রয়াত স্বামী পরমাণুবিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মতিবিনিময় করবেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন তিনি।