সাপ্তাহিক জনতার কণ্ঠ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
“সরকার সংস্কারের আনুষ্ঠানিক লড়াই শুরু করেছে, আমরা নতুন সংবিধানের লড়াই শুরু করেছি,” বলেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি দল আত্মপ্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেছেন, “এ মাসেই যে ছাত্রদের একটি বড় দল আসছে বাংলাদেশের ইতিহাসে; আপনারা জানেন যে, এখন জনমত জরিপের কাজ চলছে। আমাদের রাজনৈতিক লাইনটা কী হবে সেটা আজকে আমরা ব্যক্ত করেছি (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে)।
“আমরা আজকের (শনিবার) বৈঠকে বলেছি, আমাদের দলের রাজনৈতিক লাইন হবে নতুন সংবিধান রচনার জন্য আমাদের লড়াই। আমরা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদকে মুক্ত করেছি। নতুন করে আর যেন কোনো ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আসতে না পারে, সেজন্য ফ্যাসিবাদের কফিনে লাস্ট পেরেক মারার জন্য আমরা নতুনভাবে প্রধান উপদেষ্টাসহ রাজনৈতিক দলের সামনে বলেছি যে, বাংলাদেশে নতুন সংবিধান রচনার ও গণপরিষদ নির্বাচনের লড়াই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছি।”
শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের একথা বলেন নাসীরুদ্দীন।
বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতসহ ২৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সেখান থেকে বের হয়ে নাসীরুদ্দীন নতুন দল গঠনের কথা তুলে ধরে বলেন, “সরকার সংস্কারের আনুষ্ঠানিক লড়াই শুরু করেছে, আমরা নতুন সংবিধানের লড়াই শুরু করেছি।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, “আওয়ামী লীগের বিষয়ে কীভাবে একটি বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের সামনে একটি উন্মুক্ত দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আসা যায় সেই বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।
“আমরা বলেছি, গণপরিষদ নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন দুইটা একসাথে চলতে পারে এবং সংস্কারের কাজগুলোও একসাথে চলতে পারে। আমরা দৃপ্ত কণ্ঠে এ বিষয়গুলো সেখানে সকল দলের সামনে উপস্থাপন করেছি। বাংলাদেশের শেষ মুক্তির লড়াই বা এদেশের ভবিষ্যত একমাত্র আমরা একটি গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান উপহার দিতে পারি।”
‘আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীনের নেতৃত্বে অংশ নেন কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৈঠক থেকে বের হয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমি আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জায়গা থেকে আমি বলেছি যে, নৌকা ডুবে গেছে। সেটি আর বাংলাদেশে কখনই আসবে না। আওয়ামী লীগ এটার চ্যাপ্টার এন্ড। ৫ অগাস্ট অর্থাৎ ছাত্র-নাগরিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ পরিবর্তিত বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক।
“আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলগুলো আসে। সবার মতামতের ভিত্তিতে আমরা সবাই একটা জায়গায় একমত পৌঁছেছি যে, পরিবর্তিত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক। আপনারা দেখেছেন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল যেভাবে হারিয়ে যায়, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়, ঠিক আওয়ামী লীগও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে।
“আমরা এখন আহ্বান জানিয়েছি, সরকার উদ্যোগ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যেন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে এবং পরবর্তী কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যেন আওয়ামী লীগ ফাংশনাল না হতে পারে, সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা আজকে প্রস্তাব দিয়েছি নিবন্ধন বাতিল করার। এর মধ্যে দিয়ে দলটিকে পলিটিক্যালি ডিসফাংশনাল করা…যেটি আমরা ৫ অগাস্ট ছাত্র নাগরিকরা জনরায়ের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেটি হবে ইনস্টিটিউশনাল রায়।”