ঝালজাতীয় খাদ্য গ্রহণের পর অল্প পরিমাণে ঢেঁকুর উঠেছে, খেয়াল করে দেখবেন বুক ও গলা ঝালের কারণে জ্বালাপোড়া করছে, একটু পানি পান করলে অল্প সময়ের মধ্যেই জ্বালা কমে যাবে। এ ধরনের অনুভূতিকেই বুকজ্বালা বলা হয়। পেটভরে খাওয়ার পর শক্তিপ্রয়োগের কাজ করতে থাকলে এ ধরনের ঢেঁকুর ও বুকজ্বালায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। পাকস্থলী ও খাদ্যনালির সংযোগস্থলে একটি শক্ত Sphincter থাকে। যার ফলে পাকস্থলীতে চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলেও এই Sphincter এর অবরোধের জন্য খাদ্যবস্তু পাকস্থলী থেকে গলায় ও বুকে অবস্থিত খাদ্যনালিতে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে স্বাভাবিক অবস্থায় পাকস্থলীর খাদ্যবস্তু খাদ্যনালিতে আসতে পারে না। তবে যদি কোনো কারণে Sphincter দুর্বল হয়ে গেলে, বমি হওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে এবং জন্মগতভাবে অথবা বংশগতভাবে এই Sphincter দুর্বল থাকলে প্রায়ই এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। ফলশ্রুতিতে ব্যক্তি বুকজ্বালা অনুভব করে থাকেন। এ ধরনের অভিজ্ঞতা হয় না এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণত অল্প বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে এ ধরনের প্রবণতা কম মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। তবে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়াটাই স্বাভাবিক। ডমপেরিডন জাতীয় মেডিসিনের প্রবণতা হ্রাস করে রোগীকে সাময়িক আরাম দিতে পারে। বুকজ্বালার আরও একটি বড় কারণ হলো হৃদরোগ। হৃদরোগের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে বুকজ্বালা যা সাধারণত বুকের মাঝখানে অনুভূত হয়, যার অনুভূতি খাদ্যবস্তু উদ্গিরণের মতো একই ধরনের অনুভূতির সঞ্চার করে। হৃদরোগজনিত বুকজ্বালাও পেটভরে খাওয়ার পর দেখা দিতে পারে এবং এ জ্বালা পানি পান করলে অথবা না করলেও দুই-তিন মিনিটের মধ্যে আপনাআপনিই কমে যেতে পার। এর জন্য অনেক হৃদরোগীই এটাকে গ্যাসের ব্যথা হিসেবে প্রমাণ করে ফেলে, যেহেতু ঢেঁকুর বের করলে ব্যথার উপশম ঘটে থাকে তাই এটা রোগীর ব্যক্তিগত অনুভূতি, তবে এটা বিজ্ঞানসম্মতভাবে গ্রহণযোগ্য কোনো প্রক্রিয়া নয়। হৃদরোগের উপসর্গ হিসেবে প্রধানত বুকে ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। তবে ব্যক্তিভেদে এ ব্যথা জ্বালাপোড়া হিসেবেও বুকের মাঝখানে অনুভূতি হয়। এ ধরনের জ্বালাপোড়া ভরাপেটে বেশি দেখা দেয়। আগেই বলেছি হৃদরোগের প্রধান লক্ষণ বুকব্যথা হওয়া। তবে যাদের হৃদরোগের তীব্রতা অনেক বেশি, যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন বা যারা হার্ট ফেইলুরে ভুগছেন এবং যারা বয়োবৃদ্ধ তাদের বেলায় বুকব্যথার চেয়ে বুকজ্বালা বেশি পরিলক্ষিত হতে পারে।