নিজস্ব প্রতিবেদক: খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব নয় বলছেন চিকিৎসকরা,শারীরিক সক্ষমতা যখন ভালো ছিল তখন বিদেশ নিয়ে আসতে পারলে একটা সুযোগ থাকত যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন আপাতত হচ্ছে না। এর বিকল্প হিসেবে ‘হিউম্যান সিরাম অ্যালবুমিন’ দেওয়া হচ্ছে, যাতে লিভারের ওপর চাপ না পড়ে।
স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে মেডিকেল বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক।
এই অবস্থায় খালেদা জিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা কিংস কলেজের একটি মেডিকেল টিম আগামীকাল বৃহস্পতিবার পরীক্ষা করবে। শুক্রবার নাগাদ তিনি বাসায় ফিরতে পারেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে এক চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার শরীরে নতুন যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা অনেকটা কেটেছে। বলা যায়, পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। তাঁর শারীরিক এই অবস্থায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। এটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, স্বাস্থ্যের অনেক দিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল থাকলেও অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। বয়সও বড় ফ্যাক্টর।
তিনি বলেন, শারীরিক সক্ষমতা যখন ভালো ছিল তখন বিদেশ নিয়ে আসতে পারলে একটা সুযোগ থাকত। অর্থাৎ এভার কেয়ার হাসপাতালে যখন চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন মেডিকেল বোর্ড বারবার তাগাদা দিয়েছিলেন উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ পাঠানোর জন্য। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি।
মেডিকেল বোর্ডের এই চিকিৎসক বলেন, লিভার প্রতিস্থাপনের বিকল্প হিসেবে হিউম্যান সিরাম অ্যালবুমিন দেওয়া হবে। এটি মানুষের রক্তের প্লাজমাতে সর্বাধিক প্রচুর প্রোটিন, এটি সিরাম প্রোটিনের প্রায় অর্ধেক গঠন করে। এটি লিভারে উৎপাদিত হয়। এটি দেওয়ার পর লিভারের ওপর চাপ পড়বে না। মেডিকেল বোর্ড নতুন নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও নাতনিরা নিয়মিত হাসপাতালে আসছেন। বাসা থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি তাঁকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।