গর্ভকালীন নারীর অন্তঃসত্ত্বার মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা কেন জরুরি?

গর্ভকালীন নারীর শরীরে প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক দুইটি হরমোন বৃদ্ধি পায়-এ হরমোনগুলোর কিছুটা নেগেটিভ এফেক্ট মনের ওপর পড়ে। প্রথম তিন মাস শরীরটা একটু দুর্বল থাকে, বমি বমি ভাব, জ্বর জ্বর লাগা, খাবারে গন্ধ, সর্বোপরি পরিবারে নতুন সদস্যকে কীভাবে ভালোভাবে লালনপালন করা যাবে নিয়ে চিন্তা ভাবনা মাথায় চলে আসে। তাই গর্ভকালীন এ সময়টায় মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিল্পী সাহা।
মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর ওপর অনেকটাই পড়ে এবং পরবর্তীতে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা রয়েছে।
গর্ভকালীন সময়ে সুস্থ বাচ্চা এবং সুস্থ মায়ের জন্য মায়ের খাবার, চেকআপ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ।
▶ এই সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব তার স্বামীর, পরিবারের, সমাজের। মা যদি ওয়ার্কিং লেডি হন তাহলে চাকরির জায়গার পরিবেশ গর্ভবতীর অনুকূলে থাকতে হবে। সবাই যেন মায়ের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মি থাকে এবং তাকে সাহায্য করার মানসিকতা পোষণ করেন।
▶ এ সময়টায় অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যেসব খাবার সহজে হজম হয় এবং পুষ্টির জোগান দেয় তা বুঝে খেতে হবে। অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে ব্রেইনে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাবে এবং মেন্টাল ইরিটেশন হবে, অল্পতেই মন খারাপ হবে।
▶ গর্ভবতী পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন। সামান্য পানিস্বল্পতা আপনার ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
▶ প্রতিদিন অন্তত রাতে ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এছাড়া দিনের মধ্যে যে কোনো একটা সময় বেছে নিবেন রিলাক্স করার জন্য। নিজের সঙ্গে নিজেই সময় কাটানোর জন্য এ সময়ে আপনি নিজের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাববেন এবং চেষ্টা করবেন গর্ভস্থ ফুটফুটে শিশুটির মুখ চোখে ভাসানোর জন্য। তাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর প্ল্যান করবেন।
▶ হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা আর মাঝে মাঝে কিছু হাসির নাটক সিনেমা দেখতে পারেন। কারও গান শুনতে ভালো লাগলে এটা আপনার মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
▶ প্রতিদিন একবার খোলা আকাশের নিচে কিছু সময়ের জন্য হলেও কাটানোর চেষ্টা করবেন-হতে পারে সেটা পার্ক কিংবা আপনার বাসার ছাদ।
▶ ডেলিভারির সময়টা নিয়ে অনেকের মধ্যে ভীতি কাজ করে এবং টেনশন হয়-এটা নিয়ে আপনি আপনার সব ভয়ের কথা এবং প্রশ্ন ডাক্তারকে খুলে বলতে দ্বিধা করবেন না। ডাক্তার অবশ্যই আপনার এই ভীতি দূর করতে সাহায্য করবেন।

সর্বোপরি সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *