ভারতের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশ্যে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়।
এ চন্দ্রযানের মাধ্যমে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে নামতে যাচ্ছে ভারত। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে। খবর বিবিসির।
এই অভিযান সফল হলে, আমেরিকা, রাশিয়া, চীনের পর ভারতই হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যাদের পাঠানো মহাকাশযান চাঁদের বুকে নামবে। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’ ও রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’।
এটা এখন থেকে ৪০ দিন পর আগামী ২৩ বা ২৪ আগষ্ট চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে ১২০ ডিগ্রি কোণে অবতরণ করবে। চন্দ্রযান-৩-এর উলম্ব গতিবেগ থাকবে সেকেন্ডে ২ মিটারেরও কম।
আর এই অভিযান সফল হলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে। চাঁদের ওই অংশ এখনো খুব কমই জানে মানুষ।
ইসরোর এই চন্দ্রযানের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। যা চন্দ্রযানটিকে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ঠেলে দেবে। এলভিএম-৩ হলো একটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান।
এর আগে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ এবং চন্দ্রযাত্রায় এই এলভিএম-৩ ব্যবহৃত হয়েছে। একে ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ বলা হয়। এর মধ্যে দু’টি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি। যা ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটি চালনা করে।
এই মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে। এটি ভারতের তৃতীয় চন্দ্রাভিজান। চাঁদে পৌঁছানোর চেষ্টায় এর আগে দুটো অভিযান চালিয়েছে ভারত।
৩ হাজার ৯০০ কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ বানাতে খরচ হয়েছে ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রুপি (সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। ইসরোর প্রতিষ্ঠাতার নামে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম, যার ওজন প্রায় দেড় হাজার কেজি। ওই বিক্রমই বহন করবে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে।