ছোটদের নোবেল প্রাইজখ্যাত ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’-এর দৌড়ে এগিয়ে তিনজনের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান।

ছোটদের নোবেল প্রাইজখ্যাত ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’-এর দৌড়ে এগিয়ে তিনজনের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান।
এ পর্যন্ত যারা এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন তারা গত প্রায় ১০০ বছর ধরে বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান তাদেরই একজন।
বিশ্বের শিশুদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী ইতিমধ্যে নৌকাস্কুলের উদ্ভাবক রেজোয়ানসহ শিশুদের কল্যাণে নিবেদিত কানাডা ও ভিয়েতনামের আরো দুই কীর্তিমান ব্যক্তিকে ‘শিশু অধিকার নায়ক’ নির্বাচন করেছে।
এবার লাখ লাখ শিশুর বৈশ্বিক ভোটাভুটির মাধ্যমে এই তিনজনের একজনকে সেরা নির্বাচনের পালা, যার হাতে উঠবে ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’। বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোয় সুইডেনভিত্তিক এই পুরস্কারকে ‘ছোটদের নোবেল প্রাইজ’ আখ্যা দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ রেজোয়ান গত সিকি শতাব্দী ধরে তিনি তার দেশে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ক্রমবর্ধমান বন্যা ও দারিদ্র্য সত্ত্বেও সব শিশু, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত কন্যাশিশুদের স্কুলে পড়ালেখা শেখার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন।
রেজোয়ান ও তার প্রতিষ্ঠান ‘সিধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা’ শিশুদের জন্য ২৬টি ভাসমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে, যেগুলো দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছে রেজোয়ানের নৌকাস্কুল নামে। বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত নৌকায় ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি রয়েছে ভাসমান লাইব্রেরি ও স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক এবং কিশোরী-তরুণীদের জন্য রয়েছে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র। রেজোয়ানের উদ্ভাবিত ভাসমান স্কুলের এই ধারণাটি বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর আরো কয়েকটি দেশে বাস্তবায়ন হয়েছে।
২০০০ সাল থেকে এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের চার কোটি ৬০ লাখ শিশু জেনে আসছে ‘শিশু অধিকার নায়ক’রা কিভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। পরে এই শিশুরাই পুরস্কারবিজয়ী একজনকে বেছে নিতে বৈশ্বিক ভোটাভুটিতে অংশ নিয়ে থাকে।
আগামী ৪ অক্টোবর সুইডেনের মেরিফ্রেডে গ্রিপশোলম প্রাসাদে এবারের ২০তম বিশ্ব শিশু পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মোহাম্মদ রেজোয়ানসহ তিনজন শিশু অধিকার নায়ককে সম্মাননা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে থাকবে ১২টি দেশের শিশুরা। পুরস্কার প্রদান করার কাজে সেখানে উপস্থিত থেকে শিশুদের সহযোগিতা করবেন সুইডেনের রানী সিলভিয়া।
মর্যাদাশীল এই পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছেন মালালা ইউসুফজাই, প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলা ও ডেসমন্ড টুটু, রানী সিলভিয়াসহ সুইডেনের বেশ কয়েকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী। তা ছাড়া এই ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’ প্রগ্রামে ১২০টি দেশের ৭৬ হাজার স্কুল ও ৮৪৯টি সংগঠনের সহযোগিতা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *