১৯৮৮ সালের হিন্দি হরর সিনেমা ‘ভিরানা’ মুক্তির পর এক রাতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন অভিনেত্রী জেসমিন ধুন্না। কিন্তু জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেই তিনি হঠাৎই বলিউড থেকে হারিয়ে যান। নানা জল্পনা-কল্পনা আজও ঘিরে আছে তাঁর চলে যাওয়া নিয়ে। বহু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, ‘ভিরানা’ মুক্তির পর জেসমিনের প্রতি অন্ধ মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কুখ্যাত আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম। তিনি নাকি জেসমিনকে প্রেমের সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন, এমনকি তাঁর লোকজন দিয়ে জেসমিনকে অনুসরণও করাতেন।
জেসমিন ধুন্নার ক্যারিয়ার বলিউডে দীর্ঘস্থায়ী না হলেও তাঁর গল্প আজও আলোচনার বিষয়। ১৯৭৯ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ভিনোদ খান্নার সঙ্গে ‘সরকারি মেহমান’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন তিনি। এরপর ১৯৮৪ সালে ‘ডিভোর্স’ ও ১৯৮৮ সালে ‘ভিরানা’—এই তিন ছবিই তাঁর ক্যারিয়ারে যুক্ত হয়। এরপরই তিনি হঠাৎই হারিয়ে যান রূপালি পর্দা থেকে। ‘ভিরানা’র পর তাঁর সম্পর্কে আর কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি।

অনেকেই মনে করেন, দাউদ ইব্রাহিমের হুমকি ও হেনস্তার কারণেই অভিনয় ছেড়ে দেন জেসমিন। তখনকার দিনে দাউদের ছায়া বলিউডে বেশ জোরালো ছিল। তাঁর মতো এক মাফিয়া ডনের নজরে পড়া মানেই এক ভয়ংকর বাস্তবতা। অনেকে মনে করেন, এই মানসিক চাপে বলিউড থেকে সম্পূর্ণ সরে যান অভিনেত্রী।
৩৭ বছর ধরে তিনি যেন আক্ষরিক অর্থেই ‘গায়েব’। বহু সংবাদমাধ্যমে নানা রকম দাবি উঠলেও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি, তিনি এখন কোথায়, কী করছেন। ২০১৭ সালে ‘ভিরানা’র পরিচালক শ্যাম রামসে এক সাক্ষাৎকারে জানান, জেসমিন এখনো জীবিত এবং মুম্বাইতেই থাকেন। মা মারা যাওয়ার পর তিনি অভিনয় ছেড়ে দেন বলেও জানান শ্যাম।
তবে আরও কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘ভিরানা’র কিছুদিন পরই জেসমিন বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং সেখানেই এখন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অভিনেতা হেমন্ত বীরজে, যিনি ‘ভিরানা’তে জেসমিনের সহ-অভিনেতা ছিলেন, তিনিও ২০২৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘জেসমিন এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, ওর মুম্বাইতেও একটা বাড়ি আছে, মাঝেমধ্যে আসেন।’ তবে জেসমিন ধুন্না এখনো জনসমক্ষে আসেননি। না কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়, না কোনো ছবিতে দেখা যায় তাঁকে। দাউদ ইব্রাহিমের ছায়া থেকে রক্ষা পেতেই হয়তো তিনি নিজেকে আড়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন, আর আজও সেই আড়ালেই রয়ে গেছেন এই রহস্যময় অভিনেত্রী।
তথ্যসূত্র: ডিএনএ