খুব বেশি তেল বা মসলা ছাড়াই তৈরি করা যায় চিচিঙ্গার নানা পদ। স্বাস্থ্যকরভাবে চিচিঙ্গা রান্না করতে তেমন ঝক্কিও নেই। চিচিঙ্গা এমন এক সবজি, যা হজম হয় খুব সহজে। গরমে চিচিঙ্গা বেশ স্বস্তিদায়ক। যাঁরা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্যও চিচিঙ্গা উপকারী।
এ ছাড়া ওজন কমাতে কাজে আসে এ ধরনের সবজি। ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা থাকলে কিংবা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকলেও চিচিঙ্গা খাওয়া যায়। সব বয়সী মানুষের জন্যই এটি ভালো।
পুষ্টিগুণে ভরপুর
চিচিঙ্গায় আছে ভিটামিন ই, রিবোফ্লাভিন, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, ফোলেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস। এতে প্রচুর আঁশও আছে। আরও আছে বেশ খানিকটা জলীয় অংশ। এসব পুষ্টি উপাদানের দেহের জন্য উপকারী। সুস্থ থাকতে রোজই এমন কোনো না কোনো খাবার খাওয়া উচিত, যাতে এ ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে।
পাবেন যত উপকার
- দেহের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে চিচিঙ্গা।
- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে যত ধরনের পরিবর্তন হতে থাকে, চিচিঙ্গার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান সেসবের গতি কমিয়ে দেয়।
- আঁশসমৃদ্ধ বলে চিচিঙ্গা আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচাবে। বদহজমও উপশম হবে চিচিঙ্গায়।
- চিচিঙ্গার জলীয় অংশ দেহের পানির চাহিদা মেটাতে সহায়তা করে। বিশেষত ঝোলজাতীয় পদ পানিশূন্যতা রোধে চমৎকার কাজ করে।
পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে
চিচিঙ্গার খোসা খুব একটা পুরু করে ফেলে দিতে নেই। তাতে পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায় অনেকটাই। বরং পাতলা করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। তা ছাড়া খুব ছোট করে টুকরা বা কুচি করা হলেও পুষ্টিগুণ হারানোর ভয় থাকে। পুষ্টিমান বজায় রাখতে যেকোনো সবজির পদ ঢেকে রান্না করা উচিত।
এ ছাড়া খুব বেশি আঁচে খুব বেশি সময় ধরে রান্না না করাই ভালো। রান্নার পরও চিচিঙ্গার সবুজ রংটাই যাতে রয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
যখন, যেভাবে খেতে পারেন
- কেবল পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচ দিয়েই চিচিঙ্গা রান্না করা যায়।
- হালকা ভাপ দিয়ে নিয়ে তেলে বাগাড় দিয়ে ভেজে নিতে পারেন চিচিঙ্গা কিংবা সতে (সাঁতলানো) করতে পারেন।
- চিচিঙ্গা আর ডিম দিয়ে ভাজিও করতে পারেন। এতে চিচিঙ্গার সঙ্গে যেমন আমিষ যোগ হয়, তেমনি বাড়ে এর স্বাদ। সকালের নাশতা কিংবা রাতের খাবারের জন্য বেছে নিতে পারেন ডিম আর চিচিঙ্গার এই ভাজি। রুটি দিয়ে এই ভাজি খাওয়া হলে সঙ্গে বাড়তি কোনো পদের প্রয়োজন হয় না। ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্যও এমন পদ ভালো।
- কিংবা চাইলে দুপুরেও চিচিঙ্গার কোনো পদ খাওয়া যেতে পারে। তবে দুপুরে সাধারণত একটু বেশি সবজির প্রয়োজন হয়। কিন্তু চিচিঙ্গা রান্নার পর পরিমাণে অনেকটাই কমে আসে। তাই পরিবারের সবার জন্য দুপুরে যদি কেবল চিচিঙ্গার পদ করতে চান, তা খুব একটা সাশ্রয়ী হয় না। দুপুরে চিচিঙ্গার পদ করলেও এর সঙ্গে অন্যান্য সবজি রাখা প্রয়োজন।
- মাছ কিংবা চিংড়ি দিয়েও রান্না করতে পারেন চিচিঙ্গা। তাতেও মিলবে বাড়তি আমিষ।
-
শিশুদের জন্য নুডলস বা পাকোড়ার মতো পদে চিচিঙ্গা ব্যবহার করা যেতে পারে।