ডেঙ্গু প্রতিরোধে দেশব্যাপী ওয়ার্ডভিত্তিক কর্মসূচি ঘোষণা করলেন শেখ পরশ। আজ ৩১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার), মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে তিনি এই ঘোষনা দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সঞ্চলনা করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান এই মুহূর্তে ভীষণভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। যেহেতু এখন ডেঙ্গু প্রায় মহামারি রূপ ধারণ করেছে, সচেতন নাগরিক হিসাবে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে, আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং অপরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, শুধু মাত্র লোক দেখানো কার্যক্রম বা নামকা ওয়াস্তে কর্মসূচি যুবলীগ করে না। আমাদের এই কার্যক্রম তৃণমূলে নিয়ে যেতে হবে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমাদের ঢাকাসহ সকল মহানগরে ওয়ার্ড ভিত্তিক এই কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।
আমাদের নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে এবং পাড়া প্রতিবেশীদেরও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাহলেই এই দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব হবে। যেমন- (১) জনসচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ এবং পোস্টার, ই-পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে জনসচেতনা সৃষ্টি ও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। (২) ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে থানা-উপজেলা-আসন ভিত্তিক র্যালি করা যেতে পারে। (৩) এছাড়া রক্তদান কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। (৪) কেন্দ্রীয় যুবলীগের পক্ষ থেকে টেলিমেডিসিন টিম এবং প্রতিটি জেলা ও মহানগরে টেলিমেডিসিন টিম গঠন করতে হবে। (৫) সচেতনামূলক ভিডিও বার্তা প্রচার করতে হবে। (৬) দেশের সকল মহানগর ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমাদের প্রত্যেকর নিজ নিজ আঙ্গিনা ও আবাসস্থল পরিষ্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, এতে করে স্বল্পসময়ের জন্য হলেও ডেঙ্গু থেকে আমরা মুক্তি পাবো। মশক দমনে একমাত্র উপায় হচ্ছে আমাদের সচেতনা। আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এই পরিচ্ছন্নতার অভিযান একটা প্রতীকই বার্তা বহন করে: এর মানে, যুবলীগ সমাজের সৃষ্ট জঞ্জাল ও আবর্জনা দূর করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই জঞ্জাল হলো দুর্নীতি, অপসংস্কৃতি, অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের অপরাজনীতি। বিএনপি-জামাত যেই মিথ্যাচার করছে, তা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে, সত্য দ্বারা। এ জন্য আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এছাড়া হত্যা-খুন, অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজির অপরাজনীতি বাংলার মাটি থেকে চিরতরে দূর করতে হবে।
তিনি যুবলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদেরকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যুবলীগকেই ভবিষ্যৎ রাজনীতির ট্রেন্ড সৃষ্টি করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীবাহিনী গড়তে হবে, সেই আদর্শ হলো শোষণমুক্ত ও সমঅধিকারের ভিত্তিতে সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা। শেখ হাসিনার সৃষ্ট উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেধাভিত্তিক রাজনীতি, মুক্ত চিন্তার বিকাশ ও দক্ষ মানব শক্তির বিকল্প নাই। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা আমাদের অনুরেপ্ররণার উৎস। আমরা মানবিক যুবলীগে রূপান্তরিত হয়েছি শেখ হাসিনার অনুরেপ্ররণায়। পথ প্রদর্শক জননেত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে আজ আমাদের মানবিক যুবলীগ হাঁটছে। যুবলীগের সাম্প্রতিক কর্মকা-ের নেপথ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা। পরিশেষে আমি এই পরিচ্ছন্ন আয়োজনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি এবং দেশের সকল মহানগরের ওয়ার্ড ইউনিটগুলোকে এই ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছি।
সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দেশের যে কোন ক্রান্তিকালে দুর্যোগ-দুর্বিপাকে, করোনা মহামারিসহ যে কোন সময় অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আপনারা জানেন বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর ঢাকাসহ সারাদেশে তেমনি মহামারি আকার ধারণ করেছে এই ডেঙ্গু কিভাবে নিধন করা যায়, প্রতিরোধ করা যায়, কিভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা যায় বা সচেতন করা যায় সে উপলক্ষে আজকের ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দেশের মানুষের কল্যাণে সদা তৎপর। করোনা মহামারির সময় অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, টেলিমেডিসিন সেবা, ফ্রি অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মানুষের দাফন-কাফন ও সৎকার করেছে যুবলীগ। শুধু তাই নয় শীতের সময় সারাদেশে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে যুবলীগ। অসহায় কৃষকের জমির ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশব্যাপী বৃক্ষরোপন করে থাকে যুবলীগ। এভাবেই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মানবতার সেবায়, দেশের সেবায় সদা নিয়োজিত যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এদেশে আরও একটি দল আছে যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মানুষ পুড়িয়ে মারে, জনগণের জানমালের ক্ষতি করে, সন্ত্রাসী কায়দায় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখায় তারা হল বিএনপি-জামাত। বিএনপি-জামাত করোনা মহামারি বা অন্য কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে লবিস্ট নিয়োগ করে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। এই সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি-জামাত যেন সাধারণ মানুষের ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। যুবলীগের নেতা-কর্মীদেরও সজাগ থাকতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মোঃ ফরিদ রায়হান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হারিছ মিয়া শেখ সাগর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।