অসহনীয় তাপ ও ধোঁয়ায় আগুন নেভাতে কষ্ট হচ্ছে ফায়ার কর্মীদের
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় তুলার গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুদামের দেওয়াল ভাঙা হচ্ছে। আজ শনিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে তোলা ছবি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় তুলার গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে গুদামের দেওয়াল ভাঙা হচ্ছে। আজ শনিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে তোলা ছবি প্রথম আলো
অসহনীয় তাপ। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন চারপাশ। তাপ ও ধোঁয়ায় একেকজন ফায়ার সার্ভিস সদস্যের চোখ ও মুখ লালচে হয়ে গেছে। গুদামের টিনশেডের ওপরে দাঁড়িয়ে পানি ছিটাতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় নেমসন কনটেইনার ডিপোর বাইরে একটি তুলার গুদামে এ আগুন লাগে। আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল আগুন নির্বাপনের কাজ শুরু করে। এরপর আশপাশের স্টেশন ও আগ্রাবাদ স্টেশনসহ বিভিন্ন স্টেশনের মোট আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দেয়। টানা সাড়ে সাত ঘণ্টা ধরে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু তুলার আগুন সহজে নিভছে না। ফলে একেকজন সদস্য অত্যাধিক গরম ও আগুনের তাপে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য পালা করে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আগুন লাগা তুলার গুদামটি নেমসন কনটেইনার ডিপোর খালি কনটেইনার রাখা ইয়ার্ডের দেয়াল ঘেঁষে উত্তর পাশে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ডিপোর ভেতরে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, তুলার গুদামের দক্ষিণ পাশের টিনের চালের ওপর শুয়ে আগুন ছিটাচ্ছেন কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্য তরিকুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, রিয়াদসহ অন্যরা।
আধা ঘণ্টা পর তারা বিশ্রামের জন্য নেমে আসে। তাদের স্থলে যায় আগে বিশ্রাম নেওয়া আরেকটি দল। আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে তাপ ও ধোঁয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে। মুখের জ্বালাপোড়া থেকে বাঁচতে নিজের গায়েও পানি ছিটিয়েছেন তাঁরা। ফলে তাঁদের শরীরে থাকা পোশাক ভেজা ছিল।
এ বিষয়ে তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানালেন, বাতাসের কারণে আগুনের তাপে টিনের ওপর দাঁড়িয়ে পানি ছিটানো যাচ্ছে না। বাতাস থেকে আড়াল হওয়ার জন্য শুয়ে শুয়ে পানি ছিটাচ্ছেন তাঁরা। এদিকে সূর্যের তাপও প্রখর ছিল। ফলে বেশি সময় ধরে আগুনের কাছাকাছি থাকা যাচ্ছিল না। তাই একদল বিশ্রামে, অন্য দল কাজের মধ্যে ছিল।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, বাতাসের কারণে প্রতিকূল অবস্থা তৈরি হয়েছে তাঁদের। কিন্তু গুদামের চারদিকে ঘিরে ফেলেছেন তাঁরা। ফলে বাইরের দিকে ছড়িয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ভেতরের আগুন নেভাতে আরও অনেক সময় লাগতে পারে।
সুলতান মাহমুদ আরও বলেন, তাঁদের সদস্যরা নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। আগুনের তাপে তাঁদের চোখ–মুখ লালচে বর্ণ হয়ে গেছে। বদলি করে করে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে আগুনের কাছাকাছি। এখন পর্যন্ত বিস্ফোরণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।