(নাটোর)জনতার কণ্ঠ প্রতিনিধি : ৪৭ কেজি ওজনের সামুদ্রিক মাছটি বিক্রির জন্য নাটোরে নিয়ে আসেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী সাগর আলী।
সমুদ্র থেকে উত্তরের জেলা নাটোরের দূরত্ব কয়েক শ কিলোমিটার। তাই নাটোরের খুব কম মানুষের সামুদ্রিক মাছ দেখার অভিজ্ঞতা আছে। তাই সামুদ্রিক মাছ ঘিরে স্থানীয় মানুষের আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিবক। আর মাছটি যদি হয় সাগরের সবচেয়ে দ্রুতগতির মাছ, তাহলে তো কথাই নেই।
আজ বুধবার দুপুরে শহরের দিয়াড়ভিটা মোড়ে রাস্তার মোড়ে সেইল ফিশ দেখতে শত শত উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাই ছুটে আসেন মাছটি একনজর দেখার জন্য। সেইল ফিশ স্থানীয়ভাবে পাখি মাছ নামে পরিচিত।
সাগর আলী নামের স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ী ৪৭ কেজি ওজনের সামুদ্রিক মাছটি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। খবরটি দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে মানুষের ঢল নামে। ধূসর বর্ণের পাঁচ ফুটের কিছু বেশি লম্বা মাছটির পিঠে চওড়া পাখনা আছে। আর মুখের সামনে দিকে আছে প্রায় দেড় ফুট লম্বা শুঁড়।
মাছটি দেখতে আসা জয়নাল আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘জীবনে এ–জাতীয় মাছ কখনো চোখে দেখিনি। মানুষের সমান মাছ হয়, তা শুনেছি। কিন্তু চোখে দেখিনি। আজ নিজের চোখে দেখে খুবই অবাক হয়েছি।’
সাগর আলী জানান, মাছটি পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে বিক্রির জন্য নাটোর শহরের ভোলার আড়তে নিয়ে আসা হয়। আড়তে মাছটি বিক্রি না হওয়ায় শহরতলির দিয়াড়ভিটা মোড়ে নিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এখানেও আস্ত মাছ কেনার মতো কোনো খরিদ্দার পাননি তিনি। পরে মাছ কেটে ৫০০ টাকা কেজি দরে মোট ২২ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি করেছেন। কিন্তু মানুষের দেখার গভীর আগ্রহ থাকায় তিনি মাছটি অন্তত তিন ঘণ্টা কাটতে পারেননি। মাছটি বিক্রি করে তাঁর চার হাজার টাকা লাভ হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সেইল ফিশের বৈজ্ঞানিক নাম I যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ন্যাশনাল ওশান সার্ভিসের তথ্যে দেখা যায়, অনেক মৎস্য বিশেষজ্ঞের মতে, সেইল ফিশ মহাসাগরের সবচেয়ে দ্রুতগতির প্রাণী। মাছটি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে, তর্ক সাপেক্ষে যা ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। নৌকার পালের মতো এর পৃষ্ঠীয় পাখনাটি দেখতে হয় বলে একে সেইল (পাল) ফিশ বলা হয়। মাছটি শিকারের কাছে এসে রং পরিবর্তন করতে পারে।