হারসুটিজম (Hirsutism) হলো, পুরুষের মতো প্যার্টানে নারীর শরীরে ও মুখে কালো বা মোটা চুলের বিকাশ। অর্থাৎ পুরুষের যেসব জায়গায় লোম থাকে (যেমন- দাড়ি, গোঁফ, বুকের লোম), অথচ নারীদের থাকে না- এমন সব জায়গায় চুল গজানোকেই বলে হারসুটিজম। নারীদের চিবুক, ঠোঁটের ওপরের অংশ, ঘাড়ের পাশে, বুকের মাঝখানে, স্তনে, তলপেটে, নিতম্বে ও পিঠে চুল গজানোই হলো হারসুটিজম। সাধারণত ১০ শতাংশ নারীর এ সমস্যা হয়ে থাকে। এটি শুধু সৌন্দর্যোর অন্তরা ও মানসিক সমস্যাই নয় বরং এ সমস্যার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে জটিল রোগগুলো।
হারসুটিজমের কারণ : পুরুষ হরমোন Androgen–এর আধিক্যকে প্রধানত কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়। ৭২-৮২ শতাংশ ক্ষেত্রে Pcos- Polycystic Ovary Syndrome (ওভারির সিস্ট, স্থূলতা, অনিয়মিত মাসিক, সন্তান না হওয়া)-কে দায়ী করা হয়। বিভিন্ন টিউমার ও হরমোনও কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যেমন- Congenital Adrenal Hyperplasia, Cushing Syndrome. Prolactemia ইত্যাদি। কিছু ওষুধ, যেমন- Minoxidil, Diazoxide, Corticosteroid, Phenytoin ইত্যাদি খেলে হারসুটিজম হয়।
হারসুটিজমের লক্ষণ : নারীদের চিবুক (দাড়ি গজানো), ঠোঁটের ওপরের অংশ (গোঁফ গজানো), গালের পাশে, বুকে, স্তনে, পিঠে, তলপেটে, নিতম্বে কালো ও মোটা চুল গজানো। কারও Pcos থাকলে, স্থূলতা, মাসিকে অনিয়ম, সন্তান না হওয়া, পুরুষালী কণ্ঠ, পুরুষালী কট ইত্যাদি থাকলে।
রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা : সাধারণত যেসব পরীক্ষা করা লাগতে পারে তা হলোÑ রক্তের estosterone, Prolactin. TSH, Lipidprofile, GTT 24 hour Urinary cortical level Usex, MRI, CT Scan ইত্যাদি
হারসুটিজমের চিকিৎসা : কারণ নির্ণয় করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণ নিরাময় হওয়া সম্ভব। সাধারণত Mechanical পদ্বতি, যেমন- Plucking, Shaving, Waving, Depilation, Bleaching ইত্যাদি করা হয়। ক্রিম হিসেবে Eflornithine cream ব্যবহার করা হয়। খাবার ওষুধের মধ্যে Spironolactone, Finestereide, Metformin. Dian 35 দেওয়া হয়। Chemical feeling ভালো চিকিৎসাপদ্ধতি। Laser-এর মাধ্যমে উন্নত ও ভালো চিকিৎসা সম্ভব।
হারসুটিজমের জটিলতা : সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়া ও বিষণ্নতায় ভোগা, মাসিক অনিয়মিত বা বন্ধ হওয়া সন্তান ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া কিংবা সন্তান না হওয়া। সর্বশেষ কথা হলো- হারসুটিজম শুধু সৌন্দর্যের হানি ঘটায় না, সামাজিক সমস্যা বা বিষণ্নতা নয় বরং এর পেছনে রয়েছে জটিল রোগ। তাই হেলাফেলা না করে অবশ্যই হরমোন, স্ত্রীরোগ ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সুস্থ ও দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করুন।