জনতার কণ্ঠ ডেস্ক: কিয়ামতের দিন আল্লাহর জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবেসেছে তারা পরস্পর একসঙ্গে শান্তিতে অবস্থান করবে। আল্লাহ বলেন, ‘বস্তুত যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করে, তারা নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। আর এরাই হলেন সর্বোত্তম সঙ্গী।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৬৯)
নবীজি (সা.)-এর খাঁটি প্রেমিকরা তাঁর সঙ্গে জান্নাতে থাকবেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, কিয়ামত কখন হবে? তিনি বলেন, তুমি কিয়ামতের জন্য কি জোগাড় করেছ? সে বলল, কোনো কিছু জোগাড় করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে ভালোবাসি। তখন তিনি বলেন, ‘তুমি তাদের সঙ্গেই থাকবে, যাদের তুমি ভালোবাসো। আনাস (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.)-এর কথার দ্বারা আমরা এত আনন্দিত হয়েছি যে অন্য কোনো কথায় এত আনন্দিত হইনি। আনাস (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-কে ভালোবাসি এবং আবু বকর, ওমর (রা.)-কেও। আশা করি তাঁদের আমার ভালোবাসার কারণে তাঁদের সঙ্গে জান্নাতে বসবাস করতে পারব, যদিও তাঁদের আমলের মতো আমল আমি করতে পরিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৬৮৮; মুসলিম, হাদিস : ২৬৩৯)
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের একটি ব্যাপারে এতটা আনন্দিত দেখতে পেলাম যে অন্য কোনো ব্যাপারেই এরূপ আনন্দিত হতে দেখিনি। তা হলো, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে তার সৎকাজের জন্য ভালোবাসে; কিন্তু সে তার মতো সৎকাজ করতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তিই যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গী হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৬৯)
ভালো মানুষের সঙ্গে থাকা বা থাকার আকাঙ্ক্ষা করা এবং আল্লাহর কাছে এ জন্য দোয়া করা আগের নবীদের শিক্ষা। যেমন—
(ক) ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর কাছে এই বলে দোয়া করেছেন, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করুন।’ (সুরা শুআরা, আয়াত : ৮৩)
(খ) ইউসুফ (আ.) এই বলে দোয়া করেছেন, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতা দান করেছেন এবং আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যাদানের শিক্ষা প্রদান করেছেন। নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের হে সৃষ্টিকর্তা, আপনিই আমার কার্যনির্বাহী দুনিয়া ও আখিরাতে। আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সঙ্গে মিলিত করুন।’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত : ১০১)
(গ) সুলায়মান (আ.) দোয়া করতেন, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, যাতে আমি আপনার নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় করতে পারি, যা আপনি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছেন। আর যাতে আমি এমন সৎকর্ম করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন এবং আমাকে আপনার অনুগ্রহে আপনার সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।’ (সুরা নামল, আয়াত : ১৯)