জনতার কণ্ঠ প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সফিপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় বসতঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘরের তালা কেটে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- রাজশাহীর বাঘমারা থানার নিচুকাতিলা গ্রামের রহিদুল ইসলামের ছেলে আকাশ হোসেন (২১) ও তার স্ত্রী সালমা আক্তার আইরিন (১৮)। দুই মাস আগে তারা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ সাইফুল আলম জানান, স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া করে দুজনই আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে আকাশের সঙ্গে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার কাশিপুর এলাকার রনি মিয়ার মেয়ে সালমার বিয়ে হয়। কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। স্বামী আকাশ ওই এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে এবং তার স্ত্রী সালমা স্থানীয় কার্টন ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত শুক্রবার তাদের দুই পরিবারের সদস্যরা ওই ভাড়া বাসায় দাওয়াত খেতে আসেন। রাতের খাবার শেষে স্বামী-স্ত্রী নিজেদের কক্ষে ঘুমাতে যান। পরের দিন শনিবার (গতকাল) অনেক বেলা হয়ে গেলেও তারা ঘর থেকে বের না হওয়ায় বাড়ির অন্যদের সন্দেহ হয়। জানালা দিয়ে উঁকি দিলে দেখা যায় স্বামী আকাশ আড়ার সঙ্গে এবং তার স্ত্রী জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়।
এলাকাবাসী ৯৯৯-এ ফোন দিলে স্থানীয় মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশ গতকাল বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের দরজা কেটে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতদের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ছেলে-মেয়ের মৃত্যুতে দুই পরিবারের স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়। তাদের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না উভয় পরিবারের স্বজনরা। আকাশের মা রেশমা বেগম বলেন, গত শুক্রবার রাতে আকাশের শাশুড়ি আমাদের বাসায় আসেন। রাতে আমরা সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করি। খাওয়া-দাওয়া শেষে তারা দুজনে নিজেদের কক্ষে ঘুমাতে যায়। সকালে তাদের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়। কেন এমন হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানি না বাবা। তবে ছেলে তার স্ত্রী সালমাকে চাকরি করতে মানা করেছিল। সেই কারণ থেকে এমন হলো কিনা বলতে পারতেছি না। সালমার মা রেজিনা বেগম বলেন, গত দুই মাস আগে আকাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে মেয়ের বিয়ে হয়। এই প্রথম গত শুক্রবার মেয়ের জামাই আকাশের বাসায় আসি। রাতে সবাই মিলে আকাশদের বাসায় রাতের খাবার খাই। পরে ওরা ঘুমাতে যায়। সকালে ওদের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই।