বইমেলায় ‘মবের’ মতো উসকানিমূলক অবস্থা কেন তৈরি হলো, প্রশ্ন ইসলামী আন্দোলনের

সাপ্তাহিক জনতার কণ্ঠ, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, একটি কার্যকর রাষ্ট্রে কোনো ক্ষেত্রেই ‘মব’ সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য না। সেই নীতিতে গতকাল বইমেলায় যা হয়েছে, তা–ও সমর্থনযোগ্য না। একই সঙ্গে বইমেলায় তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্রে কোনো ক্ষেত্রেই “মব” সংস্কৃতি গ্রহণযোগ্য না। সেই নীতিতে গতকাল বইমেলায় যা হয়েছে, তা–ও সমর্থনযোগ্য না। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও করা জরুরি যে তসলিমার মতো একজন, যার দেশদ্রোহিতা ও সমাজবিরুদ্ধতা বারবার প্রমাণিত এবং যে পতিত ফ্যাসিবাদের পক্ষের নির্লজ্জ যোদ্ধার ভূমিকা পালন করেছে, তার বই কী করে বইমেলায় প্রকাশিত হতে পারে? কোন সাহসে একটা প্রকাশনী তসলিমার মতো ব্যক্তির বই ছাপাতে পারে, সেই প্রশ্ন করাও জরুরি।’

তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে অমর একুশে বইমেলার ‘সব্যসাচী’ নামের স্টলে গতকাল সোমবার বাগ্‌বিতণ্ডা ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে ওই স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। স্টলে থাকা ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে নেওয়া হয়। এই স্টলের বিরুদ্ধে নাস্তিকতা প্রচারের অভিযোগ তুলে সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গত রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেওয়া হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেছেন, ‘গতকাল যা হয়েছে, তা প্রতিক্রিয়া। সেই প্রতিক্রিয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, এমন উসকানিমূলক ক্রিয়া তৈরি হলো কেন? এই প্রশ্নের সমাধান না করে “তৌহিদী জনতা”কে শায়েস্তা করার হুমকি দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, বইমেলার ঘটনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছিলেন, মবের মহড়া সরকার শক্ত হাতে দমন করবে। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘তৌহিদী জনতা! আপনারা দেড় দশক পরে শান্তিতে ধর্ম ও সংস্কৃতি পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের আহাম্মকি কিংবা উগ্রতা আপনাদের সে শান্তি বিনষ্টের কারণ হতে যাচ্ছে। জুলুম করা থেকে বিরত থাকেন, নইলে আপনাদের ওপর জুলুম অবধারিত হবে। লা তাযলিমুনা ওলা তুযলামুনা—জুলুম করবেন না, জুলুমের শিকারও হবেন না। এটাই আপনাদের কাছে শেষ অনুরোধ!’

উপদেষ্টার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ইউনুছ আহমাদ বলেন, একজন উপদেষ্টা যে ভাষায় কথা বলেছেন ও হুমকি দিয়েছেন, তা জনতন্ত্রের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নতুন বাংলাদেশের কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত না। এমন অবস্থায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *