জনতার কণ্ঠ ডেস্ক : গত ২১ মার্চ মেসার্স এন আর ব্রিকসের চিমনি ভেঙ্গে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এরপরও আইন আমান্য করে টিন দিয়ে চিমনি তৈরি করে ইটপুড়ানো হচ্ছে।
ঢাকাসহ আশপাশের ৫ জেলার ৩১৯টি অবৈধ ইটভাটা গত ১ মার্চ ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দিলেও বেশির ভাগ ভাটাই দিব্যি চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত ইটভাটা ভেঙে দেওয়া ও জরিমানা আদায়ের পরের দিনই আবার সেগুলো চালু হয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে লোকালয় ও ফসলি জমির পাশে গড়ে উঠেছে এসব ভাটা। ভাটার কালো ধোঁয়ায় জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি ফসল ও গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বিবেচনায় এসব ভাটাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
ভাটায় অভিযান প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার সমন্বয়ে আমাদের এ কাজটি করতে হয়। তাই সবার সহযোগিতা না পেলে অভিযান পরিচালনা করাটা দুরূহ হয়ে পড়ে।’ ভাটা বন্ধের পর চালু করা প্রসঙ্গে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো ভেঙে আগুন নিভিয়ে দিয়ে আসি। এরপর তারা শুরু করলে, সে তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত আসলে কিছুই করার থাকে না। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে।’
৯৫ ভাটা বন্ধ ও জরিমানা: আদালতে দেওয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৯৫টি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ সময় জরিমানা বাবদ ৩ কোটি ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া ইটভাটার বেশির ভাগকেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ঢাকা জেলার ভাটাগুলো মূলত সাভার, ধামরাই ও কেরানীগঞ্জে অবস্থিত। এসব এলাকায় ১১৩টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি ভাটা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। গাজীপুরে ৪৬টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৩৩টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, নারায়ণগঞ্জে ১২৩টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে গত ১ বছরে ১৩টিতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ভাটা মালিকদের ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মানিকগঞ্জে ১১টি অবৈধ ভাটার মধ্যে ৮টি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পরিবেশ আইন ভঙ্গের দায়ে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মুন্সিগঞ্জে ২৬টির মধ্যে ১৬টিতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ভাটা মালিকদের ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বন্ধের পরও চলছে ভাটা: ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে অবৈধ ইটভাটা আছে ৮৬টি। গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৫১টি ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সাভার ও আশুলিয়ায় অভিযান চালানো হয়। তবে জরিমানা দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে মালিকপক্ষ।
গত ২১ মার্চ মেসার্স তুরাগ ব্রিকসের চিমনি ভেঙ্গে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এরপরও আইন আমান্য করে টিন দিয়ে চিমনি তৈরি করে ইটপুড়ানো হচ্ছে। এই চিত্র দেখা গেছে সোমবার সকালে। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর সেতুর উত্তর পাশে
গত ২১ মার্চ মেসার্স তুরাগ ব্রিকসের চিমনি ভেঙ্গে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এরপরও আইন আমান্য করে টিন দিয়ে চিমনি তৈরি করে ইটপুড়ানো হচ্ছে। এই চিত্র দেখা গেছে সোমবার সকালে। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর সেতুর উত্তর পাশেছবি: মাসুদ রানা
সম্প্রতি সাভার ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবৈধ ইটভাটাগুলো দিব্যি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সাভারের নামাগেন্ডায় মেসার্স মধুমতি ব্রিকসে কয়লার পাশাপাশি লাকড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে।
মেসার্স মধুমতি ব্রিকসের ব্যবস্থাপক মো. শিবলু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভাটা আর চালাব না। বন্ধ করে দেব।’ লাকড়ি পোড়ানোর ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে সাভারের নামাগেন্ডার একলাছ ব্রিকস, মেসার্স মধুমতি ব্রিকস, শাহদল্লাপুরের মাহিন ব্রিকস, রিপন ব্রিকসকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর্থিক জরিমানাসহ ভাটা ভেঙে দেওয়া হয়। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ধামরাই উপজেলার কালামপুর, ডাউটিয়া, জলসিন কুল্লা ও বাসনা এলাকার ১৮টি ভাটায় জরিমানাসহ ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায় ভাটাগুলোর কার্যক্রম চলছে।
পরিবেশের ১২ টা বাজিয়ে এভাবেই ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে ইট।
ভেঙে দেওয়া ভাটা পুনরায় চালু প্রসঙ্গে মেসার্স খান ব্রিকসের ব্যবস্থাপক আবদুল জলিল বলেন, প্রতি মৌসুমে প্রায় চার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। মৌসুম চলাকালে ভেঙে দিলে কি কেউ এত টাকা লোকসান দিতে চাইবে? তাই ১০ থেকে ১৫ দিন লাগে ঠিক করতে। ঠিক করার পর আবার শুরু করা হয়। তিনি আরও জানান, ভাটার মালিক বলেন, সামনের বছর ভাটা বন্ধ করে দেবেন।
গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার তুরাগ ব্রিকসে গত ২৬ জানুয়ারি ও ২১ মার্চ দুবার অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের চিমনি ভেঙে দিলেও কয়েক দিন পর টিনের চিমনি লাগিয়ে আবার ভাটা চালু করা হয়েছে। পাইনশাইল এলাকার এন আর ব্রিকসের চিমনি ভেঙে দিলেও ফের চালু করা হয়েছে ভাটা।
ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ভাটা চালু করা হয়। গত ২৮ মার্চ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিন গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার বন্ধ করে দেওয়া ১২টি ইটভাটায় আবার ইট পোড়াতে দেখা গেছে।
মানিকগঞ্জে ১১টি অবৈধ ইটভাটার স্থাপনা ও নির্মাণসামগ্রী ধ্বংস করতে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলেও এখনও এসব ভাটার কার্যক্রম চলছে। গত শুক্রবার সকালে জেলা সদরের খোলাপাড়া এলাকায় মানিকগঞ্জে ১১টি অবৈধ ইটভাটার স্থাপনা ও নির্মাণসামগ্রী ধ্বংস করতে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলেও এখনও এসব ভাটার কার্যক্রম চলছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বলিয়াদি, চণ্ডীতলা, শাহবাজপুর ও শ্রীফলতলী এলাকাতেও। গত ১৯ মার্চ শ্রীফলতলীর পদ্মা ব্রিকস ও কোনাবাড়ী ব্রিকসের চিমনি ভেঙে ভাটা বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও তারা টিনের ছোট চিমনি তৈরি করে আবার ভাটা চালু করেছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব গোপালনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘মেসার্স নজরুল ব্রিকস’ ভেঙে দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাশের মেসার্স খাদিজা ব্রিকস, এএসবি ব্রিকস, মেসার্স চিশতিয়া সাবেরিয়া ব্রিকসের চুল্লি ভেঙে দেন। অভিযানে মেসার্স বোখারী ব্রিকস, মেসার্স এস এস ব্রিকস, মেসার্স তাজ ব্রিকস, এএন এস ব্রিকস, মেসার্স এনবিএম ব্রিকস, মেসার্স আজাদ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নিজাম উদ্দীন ব্রিকস এবং মেসার্স তাজ ব্রিকস—এই ১১টি ইটভাটার প্রতিটিকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে ভাটাগুলোতে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
মানিকগঞ্জের অবৈধ ১১টি ইটভাটা হচ্ছে, সিঙ্গাইর উপজেলার খোলাপাড়া গ্রামের আলী আকবর ব্রিকস-১, সুমাইয়া ব্রিকস ও মোহনা ব্রিকস; জেলা সদরের হাসলী গ্রামের এমিকা ব্রিকস, একতা ব্রিকস ও আমগাছি লেমুবাড়ি এলাকায় সোবহান ব্রিকস, হরিরামপুর উপজেলার পিপুলিয়া গ্রামের সততা ব্রিকস, স্বাধীন ব্রিকস ও আমিন ব্রিকস; সাটুরিয়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামের খান ব্রিকস এবং ঘিওর উপজেলার বাগবানিয়াজুরী এলাকার নূরুল ব্রিকস।
সম্প্রতি সরেজমিন খোলাপাড়া গ্রামের আলী আকবর ব্রিকস-১, সুমাইয়া ব্রিকস ও মোহনা ব্রিকস নামের জিগজ্যাগ ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। এ সময় কথা হলে সুমাইয়া ব্রিকসের মালিক সুরুজ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রিট আবেদন করেছেন। হাইকোর্ট চলতি বছর ভাটার কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। একই কথা বললেন মোহনা ব্রিকসের ব্যবস্থাপক সানোয়ার হোসেন।
মুন্সিগঞ্জে বন্ধ করে দেওয়া ভাটাগুলো নতুন করে আবার চালু করা হয়েছে। ভাটা মালিকদের দাবি, তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলেও অভিযানের সময় জরিমানা ও ভাটা ভেঙে দেওয়া হয়।
আবাসিক এলাকায় স্থাপন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় সম্প্রতি সিরাজদিখানের বালুচর ইউনিয়নের কয়রাখোলা এলাকার ন্যাশনাল ব্রিকসের মালিক বরকত উল্লাহকে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া, চান্দেরচর এলাকার মা ব্রিকসের মালিক নুর হোসেনকে চার লাখ, একই এলাকার নিজাম ব্রিকসের মালিক নিজাম উদ্দিন, কেয়াইন ইউনিয়নের নীলা ব্রিকসের মালিক মো. শামীমকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ সময় ভাটাগুলোর চুল্লি ভেঙে দেওয়া হয়। তবে এসব ভাটার কার্যক্রম এখনো চলছে।
সিরাজদিখানের বালুচর এলাকায় আপেল মাহমুদ ব্রিকসের মালিক আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ‘কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বললেই বন্ধ রাখব নাকি? আমাদের সব কাগজপত্র আছে। তাই আমরা কার্যক্রম চলমান রেখেছি।’
মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, যাঁরা নির্দেশ অমান্য করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে ভাটা
আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ঢাকার কেরানীগঞ্জেও অবৈধ ইটভাটাগুলো চলছে। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জের ঘোষকান্দা, ব্রাক্ষণগাঁও, জাজিরা, রাজেন্দ্রপুর ও বাঘৈর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অবৈধ ভাটায় ইট পুড়িয়ে পরিবেশের দূষণ থেমে নেই। পোড়ানো হচ্ছে কাঠও। আবাসিক এলাকা এমনকি কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশেও ইটভাটা রয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে রাজেন্দ্রপুরের বাঘৈর এলাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উত্তর পাশের তেঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান লাট মিয়ার মালিকানাধীন পাঁচটি ইটভাটা চলছে। একাধিকবার পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করলেও এখনো চলছে ভাটাগুলো।
ইউপি চেয়ারম্যান লাট মিয়া বলেন, বেশিরভাগ ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ইটভাটা চলছে। এগুলোর বৈধ কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকারি নিয়ম কানুন মেনে ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পশ্চিম ঘোষকান্দা এলাকার সোহেল মিয়ার মেসার্স চাচা ভাতিজা ব্রিকস নামে কৃষিজমি ও আবাসিক এলাকায় একটি ইটভাটা রয়েছে। গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত এই ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে। এরপরও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে পুনরায় ইটভাটার কাজ চলছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, কারাগারের আশপাশ এলাকায় ইটভাটার কারণে সমস্যার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ইটভাটা বন্ধ করা হলেও কয়েকটি ভাটা এখনো চলছে।
ঢাকার ধামরাই উপজেলার মধুডাঙ্গা এলাকার মেসার্স তুহিন ব্রিকসের কার্যক্রম ডিসেম্বরে বন্ধ করে দেয়া হলেও ভাটায় ইট প্রস্তুত থেমে নেই।
ঢাকার ধামরাই উপজেলার মধুডাঙ্গা এলাকার মেসার্স তুহিন ব্রিকসের কার্যক্রম ডিসেম্বরে বন্ধ করে দেয়া হলেও ভাটায় ইট প্রস্তুত থেমে নেই।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, কোনো অবস্থাতেই অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। খোঁজ নিয়ে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশদূষণ, জনস্বাস্থ্যের হুমকি: লোকালয়ের পাশে গড়ে ওঠা ইটভাটা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার দূষণে আশপাশের বাসিন্দারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন। শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগবালাই দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া ধোঁয়ার কারণে গাছপালা ও ফসল উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে।
নারায়ণগঞ্জ সদরের পূর্ব গোপালনগর এলাকার বাসিন্দা মো. জাফর বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় তাঁদের সবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। সারা বছর ঠান্ডা, সর্দি–জ্বর লেগেই থাকে। তিনি বলেন, ধোঁয়ায় টিনের চালা নষ্ট হয়ে যায়। গাছে ফল ধরে না।
পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যে ভাটাগুলো বন্ধ করা হয়, সেগুলোতে আবার ইট পোড়ানো হচ্ছে।