বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাত এক সময় সারাবিশ্বের দৃষ্টান্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র নানা উপায়ে প্রাণিসম্পদ খাতে সহযোগিতা দিচ্ছে, প্রণোদনা দিচ্ছে। সম্মিলিতভাবে প্রাণিসম্পদ খাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রাণিসম্পদ খাত যত জোরদার হবে, দেশের অর্থনীতি তত জোরদার হবে। আর দেশের অর্থনীতি যত জোরদার হবে, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দেশের সবক্ষেত্রে উন্নয়ন তত নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ খাত নানাভাবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায়, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশাল ভূমিকা রাখছে। এই সেক্টর বিকশিত হওয়ায় বেকারত্ব দূর হচ্ছে, কর্মোদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, মানুষ স্বাবলম্বী হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনৈতিক সচল হচ্ছে। এভাবে প্রাণিসম্পদ খাত দেশের অন্যান্য সব খাতকে অতিক্রম করে বহুমুখী ভূমিকা রাখছে। অদূর ভবিষ্যতে আরো ভূমিকা রাখবে।
শ ম রেজাউল বলেন, আমরা অপ্রতিরোধ্য গতি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি। এক সময় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু কম ছিল, মাতৃ মৃত্যু-শিশু মৃত্যুর হার ব্যাপক ছিল, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল। এ জাতীয় একটি বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাতের অসাধারণ অবদান রয়েছে। এ অর্জনের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি খাত তথা বেসরকারি উদ্যোক্তারা ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। এর ফলে একটা বিস্ময়কর উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ খাতের সাম্প্রতিক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রাণিচিকিৎসায় মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। দেশে আন্তর্জাতিকমানের প্রাণিসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণিজাত খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। গবাদিপশুর জন্য টোটাল মিক্সড রেশন খাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনায় খামারিদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ নিয়ে মানুষের মধ্যে যেন একটা নতুন ধারণা সৃষ্টি হয় সেজন্য বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে সরকার প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় প্রাণিসম্পদ খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতে গুরুত্ব না দিলেও দেশের প্রাণিসম্পদ খাতকে এখন সবাই গুরুত্ব দেয়। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ডসহ পৃথিবীর অনেক দেশ প্রাণিসম্পদকে ঘিরে উন্নয়ন করছে। সে অনুপাতে আমাদের এ খাতে অতীতে উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা,পলিসি এবং সহযোগিতার কারণে এ খাত অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ খাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সমৃদ্ধিতে, মানুষকে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভালো ভূমিকা পালন করছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম, এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট এফ এইচ আনসারী, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মসিউর রহমান ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।