ঢাকা: সাপ্তাহিক জনতার কণ্ঠ .কম। এপ্রিল ২০, ২০২৫
বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে দেশটির সঙ্গে নতুন করে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ এবং পাকিস্তানপ্রীতি নিয়ে অনেকেরই তির্যক মন্তব্য শোনা যায়। বাংলাদেশ পাকিস্তানমুখী হয়ে যাচ্ছে, নতুন পাকিস্তান সৃষ্টি হচ্ছে ইত্যাদি নানা গুজব ও অপপ্রচারে সয়লাব ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা সফরে এসেছেন গত বুধবার। দীর্ঘ ১৫ বছর বিরতির পর অনুষ্ঠিত হলো দুই দেশের সচিব পর্যায়ে বৈঠক।
সামনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ন্যূনতম পাকিস্তানপ্রীতি দেখায়নি; বরং চোখে চোখ রেখে কথা বলেছে। দীর্ঘদিনের দাবি পুনরুচ্চারণ করেছে বাংলাদেশ। একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা, পাওনা টাকা ফেরত চাওয়া এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপিত হয়েছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে এটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এক ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিন অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের তাগিদ দেন। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নতুন কূটনীতির বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট হলো। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া হবে ঠিকই, কিন্তু কখনো আত্মমর্যাদা বিকিয়ে দিয়ে নয়, এই বার্তাটি আবার স্পষ্ট হলো। এটিই ড. ইউনূস সরকারের কূটনীতির বৈশিষ্ট্য।
কূটনীতির পরিভাষায় একে বলা হয় ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। বর্তমান টলমাটাল বিশ্বরাজনীতিতে ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’ বিষয়টির প্রচলন হয়েছে। একটি আশু সংকট নিরসনে কূটনৈতিক চ্যানেলের বাইরে গিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা যখন সরাসরি উদ্যোগ নেন, যখন একটি রাষ্ট্রের বরেণ্য কোনো ব্যক্তির আন্তর্জাতিক পরিচিতি, জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানো হয় ওই সংকট নিরসনে, তখন সেটাকে বলা হয় ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। কূটনীতিতে এটি হলো চমক। দেশের স্বার্থ রক্ষায় প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে এ ধরনের কূটনীতি এখন বেশ প্রচলিত।
গত বছর ৮ আগস্ট রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেওয়ার পর কূটনীতির ক্ষেত্রে ড. ইউনূস প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চমক দেখাচ্ছেন। প্রচলিত কূটনীতির ধারার বাইরে গিয়ে নিজের ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি কাজে লাগিয়ে তিনি শুধু বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যাননি, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় একটি নতুন দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র সুফল পেতে শুরু করেছে। তিনি তাঁর অবস্থান থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসতে নিরন্তর চেষ্টা করছেন। প্রচলিত ধারার দীর্ঘসূত্রতার কূটনীতির পরিবর্তে তিনি পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্পর্কের আলোকে দেশের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের দ্বার উন্মোচনের বিষয়টিই ধরা যাক, পাকিস্তানের কাছে আমরা ৪.৩ বিলিয়ন ডলার পাই। আটকে পড়া পাকিস্তানিরা এ দেশে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছে। তাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের অগ্রগতি নেই। একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী আজ পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। আমরা যদি দুই দেশের মধ্যে কথা বলা বন্ধ রাখি, আমরা যদি তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখি, তাহলে শেষ পর্যন্ত আমাদেরই ক্ষতি। কিন্তু সব কিছুর আগে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কূটনীতিতে রাগ, মান-অভিমানের স্থান নেই।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করেই আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর আলাদা হয়ে গেছে। অর্থনৈতিকভাবে সিঙ্গাপুর এখন মালয়েশিয়ার চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ একটি দেশ। সিঙ্গাপুরেরও বেদনা আছে। মালয়েশিয়া রীতিমতো তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল। কিন্তু সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেনি; বরং দুই দেশের সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু বোমা ফেলে জাপানকে বিধ্বস্ত করেছিল আমেরিকা। ওই ক্ষত এখনো বয়ে বেড়ায় জাপান। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন জাপানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিশ্বে এ রকম উদাহরণ অনেক রয়েছে। ১৯৭১ সালের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত পাকিস্তান ভোগ করছে। এখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থাকতেই পারে। আন্তর্জাতিক কূটনীতি হলো একটি বাস্তবতা। কূটনীতির ধরন এমন হওয়া উচিত, যাতে নিজ দেশের স্বার্থ শেষ পর্যন্ত রক্ষিত হয়। ড. ইউনূস সেই ধারার সূচনা করেছেন। গত ১৫ বছর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে, গালাগাল করে আমরা কী পেয়েছি? আমরা কি ৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত পেয়েছি? আমরা কি আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত পাঠাতে পেরেছি? আমরা কি পাকিস্তানকে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য রাজি করাতে পেরেছি? বরং ক্ষতি হয়েছে আমাদের। অথচ ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে এখন আমাদের যেমন সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে, তেমনি পাওনা টাকা আদায়ের ব্যাপারে আলোচনার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে। আমরা জানি, চটজলদি এই টাকা পাওয়া যাবে না। কিন্তু একটা প্রক্রিয়া তো শুরু হলো। বাংলাদেশ যে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের সামনে এই দাবি উত্থাপন করল, এটি একটি বড় কূটনৈতিক বিজয়।
শুধু পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র পুরোটা বোঝানো যাবে না। ড. ইউনূস এমন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, যিনি বিশ্বের যেকোনো সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। বিশ্বজুড়ে তাঁর পরিচিতি ও অবস্থানের কারণে তিনি যেকোনো বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দর-কষাকষি করতে পারেন। এই যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল, তখন আমরা ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’ প্রত্যক্ষ করেছি। তিনি দ্রুততম সময়ে অন্য উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে দ্রুত চিঠি দিতে হবে। অন্য কেউ হলে কী করত? আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা কী? এ ধরনের ঘটনার পর আমরা চুপ করে বসে থাকি এবং অপেক্ষা করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়। আমরা ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাসকে জিজ্ঞেস করতাম কী করা যায়, তারা অপেক্ষা করার পরামর্শ দিত। অতীতে এভাবেই সংকট সমাধানের চেষ্টা হয়েছে।
কিন্তু ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’ তা বলে না। ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র মূল তত্ত্ব হলো দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা। তিনি তা-ই করেছেন। দ্রুত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠিয়েছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরকে (ইউএসটিআর) চিঠি পাঠিয়েছেন। দ্রুত এই উদ্যোগের ফল আমরা হাতেনাতে পেয়েছি। আমরা দেখতে পেলাম, বাংলাদেশসহ ৭৫টি দেশের ওপর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি যে ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র কারণে হয়েছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
অতীতে ভারতের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক দেখেছি। কিন্তু এই সম্পর্কের নামে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতেও দেখেছি আমরা। ভারতের সমর্থন ও সহানুভূতি পেতে আমরা নিজেদের আত্মমর্যাদা, আমাদের স্বার্থ—সব কিছু জলাঞ্জলি দিয়েছি। ভারতের অনুগত রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের দেশে-বিদেশে পরিচিত করিয়েছি। কিন্তু ড. ইউনূস সেই পথে হাঁটেননি। তিনি একদিকে যেমন ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলছেন, আবার ভারতের ‘চিকেন নেক’ বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করে দুই দেশ কিভাবে উপকৃত হতে পারে তা-ও তুলে ধরে বিশ্বকূটনীতিতে একটি নতুন দর্শন সামনে এনেছেন। একইভাবে তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়গুলোও তুলে ধরছেন। এ ধরনের আত্মমর্যাদার কূটনীতি বাংলাদেশ বহুদিন দেখেনি। ভারত আমাদের নিকট প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রাখতেই হবে। সব কিছু বদলানো গেলেও প্রতিবেশী বদলানো যায় না। কিন্তু এই সম্পর্কের রূপরেখা কেমন হবে, এই সম্পর্ক কিভাবে বিকশিত হবে, আগে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভারত মানেই জুজু, তাদের ভয় পেতে হবে। তারা যেটা বলবে সেটাই করবে। কিন্তু ড. ইউনূস সেই পথে হাঁটেননি। বরং তিনি দুটি রাষ্ট্রের সমান মর্যাদার বিষয়কে সামনে এনেছেন। প্রচলিত কূটনৈতিক চ্যানেলের বাইরে গিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদির সামনে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। কিন্তু ভারত নিজেই দ্রুত বুঝবে, এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে বাংলাদেশের চেয়ে ভারতেরই ক্ষতি বেশি হবে। আর এই উপলব্ধির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও আমরা দেখব যে ড. ইউনূস চীনে গিয়ে বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত উন্নয়নের বড় প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন। কোন কোন খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ দরকার এবং কোন কোন খাতে বাংলাদেশ চীনের সহায়তা পেতে পারে, হাতে-কলমে তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বার্থ যেখানে ক্ষুণ্ন হচ্ছে সেখানে ড. ইউনূস প্রচলিত ধারার কূটনীতির বাইরে গিয়ে সরাসরি কথা বলছেন।
উদাহরণ হিসেবে এখানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দণ্ডিত বাংলাদেশিদের কথা বলা যায়। ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে সমর্থন করতে গিয়ে তাঁরা ওই দেশে বিক্ষোভ করেছিলেন। দেশটির আইন অনুসারে তাঁদের গ্রেপ্তারের পর দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশি ওই বন্দিদের মুক্তি দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁরা দেশে ফিরেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা। কোনো বিদেশি দণ্ডিতকে এভাবে মুক্তি দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এটি সম্ভব হয়েছে একমাত্র ড. ইউনূসের কারণে।
আবার আমরা লক্ষ করছি, গত আট মাসে অর্থনীতিতে নানা টানাপড়েনের পরও দেশের অর্থনীতি এখন পর্যন্ত সচল রয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো প্রবাসী বাংলাদেশিরা সব কিছু উজাড় করে দিয়ে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। ড. ইউনূসের প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের এটি আস্থা ও কৃতজ্ঞতার প্রমাণ। এটি হলো ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র একটি বড় উদাহরণ।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল খুবই অনুল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক কোনো ফোরামে বাংলাদেশকে সপ্রতিভ দেখা যায়নি, বরং বাংলাদেশের কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগদান করতে পারলেই নিজেদের ধন্য মনে করতেন। সেই অবস্থান থেকেও সরে এসেছে বাংলাদেশ। এটি সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের কারণে।
আমরা লক্ষ করছি, বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহায়তা দিচ্ছে। এটি ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র চমক। ড. ইউনূস শুধু একজন সরকারপ্রধান নন, তিনি একজন বিশ্বনেতাও। এ কারণে টাইম ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। ড. ইউনূস সম্পর্কে টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন। হিলারি শুধু সাবেক ফার্স্ট লেডি কিংবা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নন, বিশ্বের একজন প্রভাবশালী নীতিনির্ধারক তিনি। হিলারি ক্লিনটন লিখেছেন, ‘ড. ইউনূস বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন। ’
ড. ইউনূস এখন বিশ্বনেতা। তিনি বিশ্বশান্তির দূত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আস্থা অর্জন সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের কারণেই। সব অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র তিনি একাই রুখে দিচ্ছেন। আর সে কারণে তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করছে। তিনি সব সময় বিশ্বকে বলছেন যে বাংলাদেশের কাছ থেকে বিশ্বের অনেক কিছু নেওয়ার আছে, অনেক কিছু শেখার আছে। বাংলাদেশকে দুর্বল ভাবমূর্তি থেকে সরিয়ে ড. ইউনূস নতুন ব্র্যান্ডিংয়ে উপস্থাপন করছেন। সেই ব্র্যান্ডিং হলো বাংলাদেশের উদ্দীপনা, তারুণ্যের শক্তি ও সম্ভাবনা। ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’তে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।