জনতার কন্ঠ স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা নিয়ে গরমিল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা এ নিয়ে একেক রকম তথ্য দিচ্ছে। কেউ বলছে ৪৯, কেউ ৪৬, আবার কেউ ৪১ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন গতকাল রোববার বিকেলে নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৯ বলে জানান। তাঁর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। গতকাল রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ফেসবুকে আবার জানানো হয়, নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৬।
গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় জেলা প্রশাসক জানান, নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৫। কিছুক্ষণ পর একজন বাড়িয়ে নিহত ৪৬ জন বলে তিনি জানান। রাতে আবার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়।
যেভাবে চলছে আগুন নেভানোর চেষ্টা কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণস্থল থেকে ধোঁয়া উঠছে ।
গত শনিবার সন্ধ্যায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর বিস্ফোরণ হয়। হতাহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হচ্ছিল। সেখানে নিহত মানুষের হিসাব সংরক্ষণ করছিল হাসপাতাল পুলিশ এবং পুলিশের বিশেষ শাখা। গতকাল সকালে নিহত মানুষের সংখ্যা হয় ১৫। বিকেল নাগাদ বেড়ে ৪১ জন হয়। বিকেল ৫টার দিকে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৯।’ তাঁর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এর এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় ৬টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান হাসপাতালের বাইরে অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৫। অবশ্য কিছুক্ষণ পর তাঁরা একজন বাড়িয়ে ৪৬ জন করেন। রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাসের বরাত দিয়ে জানানো হয়, নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৯। এরপর রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ফেসবুকে পুনরায় জানানো হয়, নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৬।
শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভেতরে আগুন লাগার পর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আশপাশের প্রায় আড়াই বর্গকিলোমিটার এলাকা। ওই বিস্ফোরণ ও আগুন পুড়ে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে নয়জনই ফায়ার সার্ভিসের সদস্য।
বিএম কনটেইনার ডিপোয় কী হতো, মালিকানায় কারা দুর্ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আরও রয়েছেন ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিবহনশ্রমিকেরা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যসহ দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী। এর মধ্যে পুলিশের এক সদস্যের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জনকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা চলছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।