মেধাবীরা যে ভুল এড়িয়ে সফল হয়

সফল হতে হলে কিছু ভুল এড়িয়ে যেতে হয়। কিছু ভুল এড়িয়ে চলতে পারলে দীর্ঘ মেয়াদে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ব্যক্তিগত উন্নতির ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো তুমি অনুসরণ করতে পারো।

প্রোক্রাস্টিনেশন বা পরে করা

সফল হওয়া লোকদের মধ্যে পরে করব বিষয়টি একদমই নেই। কাজ পরের জন্য রেখে দিলে বা পিছিয়ে দিলে শুধু কাজের চাপ বাড়েই। এর ক্ষতিকর প্রভাব বোঝা যায় সময় চলে গেলে। যখন অনেক কাজ জমে যায় এবং সব কাজ ভালোভাবে করার বদলে তাড়াহুড়ো শুরু হয়। তখন এর কুপ্রভাব বোঝা যায়। তাই তোমাকে কাজ করতে হবে পরিকল্পনা করে। কাজের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা করে, প্ল্যান করে কাজ করলে শেষ মুহূর্তের তাড়াহুড়ো ও চাপে পড়বে না।

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস

আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ হলেও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস প্রস্তুতির ঘাটতি তৈরি করতে পারে। তাই বুদ্ধিমান শিক্ষার্থীরা বিনয় বজায় রাখে। সব সময় নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকে।

ফিডব্যাক উপেক্ষা করা

যখন কেউ তোমার গঠনমূলক সমালোচনা করবে, তখন তুমি নিজের ভুল বুঝতে পারবে। শিক্ষক ও সহপাঠীদের কাছ থেকে পাওয়া ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়াকে সব সময় গুরুত্ব দিয়ে শুনলে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবে। নিজেকে উন্নত করতে হলে অন্যের মতামত মন দিয়ে শুনতে হবে।

ক্লাস ফাঁকি দেওয়া

নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সফল হতে হলে তোমাকে মনে করতে হবে, প্রতিটি ক্লাসেই নতুন ধারণা পাওয়া যায়। পড়া বুঝে নেওয়ার সুযোগ থাকে প্রতিটি ক্লাস। তাই পড়ার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে তোমার ক্লাস ফাঁকি দেওয়া ঠিক হবে না।

সফল যদি হতে চাও

সফল যদি হতে চাও

একসঙ্গে অনেক কাজ বা মাল্টিটাস্কিং

একসঙ্গে অনেক কাজে হাত দিলে দক্ষতা বাড়ার বদলে কমে যেতে পারে। একসঙ্গে সব না করে একের পর এক কাজ করতে হবে। এতে তোমার মনোযোগ বাড়বে। পড়ার বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে হলে ও মনে রাখতে হলে তোমাকে ধারাবাহিকভাবে পড়তে হবে।

স্বাস্থ্যকে অবহেলা করা

শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সরাসরি পড়াশোনায় প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম হতে পারে সাফল্যের সূত্র।

সফল মানুষেরা কী করেন

সফল মানুষেরা কী করেন

পরীক্ষার জন্য শেষ মুহূর্তে মুখস্থ করা

আমরা তো মুখস্থকে না বলি। শেষ মুহূর্তে পড়ে যখন বুঝতে পারে না, তখন অনেকেই মুখস্থ করে পরীক্ষার হলে চলে যায় এবং পরীক্ষার খাতায় উগড়ে দেয়। বুদ্ধিমান শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়ার অভ্যাস করে বলে পরীক্ষার আগে তাদের ভুগতে হয় না। এই পদ্ধতিতে দীর্ঘ মেয়াদে শেখা হয়। তথ্যে ভারাক্রান্ত হতে না চাইলে আগে থেকেই পড়ো।

সাহায্য চাইতে লজ্জা পাওয়া

বারাক ওবামা এক বক্তৃতায় বলেছেন, প্রয়োজন হলে সাহায্য চাইতে ভয় পাবে না। সাহায্য চাওয়া কোনো লজ্জার বিষয় নয়। শিক্ষক বা সহপাঠীর কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াকে গভীরভাবে বোঝে। ফলে সাফল্য পাওয়া যায় শতভাগ।

আমি কীভাবে সফল হব?

আমি কীভাবে সফল হব?

সময়ের সঠিক ব্যবহার না করা

সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হলে সময় নিয়ে তোমার পূর্বপরিকল্পনা থাকতে হবে। অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যানার বা ডিজিটাল টুল পাওয়া যায়। যেগুলো ব্যবহার করে সময়সূচি ঠিক করা যায়। ডিজিটাল ক্লকই এখন মনে করিয়ে দেয় যে তোমার পড়ার সময় হয়েছে। একাডেমিক কাজ হোক বা কম গুরুত্বপূর্ণ যেকোনো কাজ, কাজের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হলে তোমাকে প্ল্যান করে কাজ করতে হবে।

সফট স্কিলকে কম গুরুত্ব দেওয়া

শুধু একাডেমিক দক্ষতাই যথেষ্ট নয়। পড়াশোনার ক্ষেত্রে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারা, দলগত কাজে যুক্ত থাকা এবং নেতৃত্বের মতো স্কিলগুলো হলো সফট স্কিল। এগুলো শুধু চর্চার বিষয় নয়, নতুন দক্ষতা তৈরি করে সফট স্কিল। যেগুলো শিক্ষার্থীর সামগ্রিক সাফল্য অর্জন এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য খুব প্রয়োজনীয়।

এই সাধারণ ভুলগুলো এড়িয়ে চললে সফলতার সম্ভাবনা বাড়বে। তোমার একাডেমিক যাত্রা হবে আরও সুশৃঙ্খল, চাপমুক্ত। পড়াশোনায় সফল হতে তুমি এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জন্য একটি দিকনির্দেশনা হিসেবে নিতে পারো।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *