স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বারবার কেন দায়িত্বে ঢাকা ওয়াসার বর্তমান এমডি? এমন প্রশ্নে সাংবাদিকরা আমাকে বিভিন্ন সময় শক্ত করে ধরেছে। বারবার সমালোচনা হয়েছে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে নিয়ে। তারা বলেছেন, কেন বারবার ওয়াসা এমডি হিসবে বর্তমান এমডি থাকেন। কেন এতবার তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) কারওয়ান বাজারের ঢাকা ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা ওয়াসা কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর মতবিনিময়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছি কোনো মানুষই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে একজন কর্মকর্তা ২০/৩০/৪০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়াসার এমডি বারবার কেন দায়িত্ব পেয়েছে কারণ তিনি তার যোগ্যতা সামর্থের পরিচয় দিয়েছেন। নিজের যোগ্যতার কারণে, কর্মদক্ষতার কারণে তিনি বারবার দায়িত্ব পেয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের দিকে দেখেই বিবেচনা করা হয় সে রাষ্ট্র কতটা উন্নত। সে কারণে ঢাকা ওয়াসাকেও এমন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা আমাদের দায়িত্ব। ইতোমধ্যে ঢাকা ওয়াসা তাদের গুণগতমান, অগ্রগতির দিক থেকে তার প্রমাণ দিয়েছে। ঢাকা ওয়াসা তাদের কোয়ান্টিটি, কোয়ালিটি এবং মানুষের চাহিদা পূরণ করেছে। এটা অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে। তাদের অগ্রগতি অবশ্যই প্রশংসনীয়।
দেশে ভোটার সংখ্যা কত, জানাল ইসি
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাকর্মচারীরা তাদের এমডির নেতৃত্বে কাজ করে ঢাকা ওয়াসাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পানির দাম নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার সময় আমি বলেছি ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদনের খরচ হয় ২৬ টাকা থেকে ৩০ টাকা। ৩০ টাকায় যদি উৎপাদন খরচ হয় তাহলে সেটা যদি আমি ১৫ টাকায় বিক্রি করি, তাহলে বাকি ১৫ টাকার আমি কোথায় থেকে দিব? তাহলে এটা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, সারা বাংলাদেশের মানুষের থেকে সরকার ট্যাক্সসহ বিভিন্ন খাত থেকে টাকা আরোহন করবে আর সেই সবার টাকা দিয়ে এখানে ওয়াসার পানির দাম না বাড়ানোর জন্য ভর্তুকি দিয়ে যাব?
তিনি বলেন, একজন মানুষ গুলশানে বসবাস করে সেখানে তার প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা খরচ হয়, আর যদি ওয়াসার পানির দাম মাসে ১০০/২০০ টাকা বেড়ে যায় তাহলে গুলশানের মানুষের এটা সহ্য হবে না। তাহলে কি গরিব মানুষের থেকে টাকা এনে সরকার এই গুলশানের মানুষের জন্য পানিতে ভর্তুকি দিবে? তাহলে গরিব মানুষের প্রতি যে আমাদের কমিটমেন্ট আছে তার কি হবে? এটা কি তাহলে যৌক্তিক যে গরিব মানুষের টাকা দিয়ে বড়লোক মানুষদের ভোটটি কি আমরা দিব?
মন্ত্রী বলেন, ওয়াসার নিজেদের মধ্যেকার কোনো দুর্নীতির কারণে যদি পানির দাম বাড়ে তাহলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু গরিব মানুষের টাকা এনে সেই টাকা থেকে ওয়াসার পানির দাম কম রাখার জন্য ভর্তুকি দেওয়া হবে না। পাশাপাশি ওয়াসার পানির গুণগত মান আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের কাজ করে যেতে হবে।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.সুজিত কুমার বালাসহ ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।