বিনোদন রিপোর্ট: বাঙালির প্রাণের রবি ঠাকুরের বংশধর তিনি। শর্মিলা ঠাকুর কীভাবে সম্পর্কিত বিশ্বকবির সঙ্গে? নিজের মুখেই দিলেন জবাব।
তিনি ভারতীয় সিনেমার আইকন। বলিউড সাবালক হয়েছে তাঁর হাত ধরে। ষাটের দশকে রুপোলি পর্দায় বিকিনি পরে বিপ্লব করেছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। সত্য়জিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ ছবির হাত ধরে সেলুলুয়েডে জার্নি শুরু হয় তাঁর। শর্মিলার শরীরে বইছে ঠাকুর পরিবারের রক্ত, ‘মানিকদা’ (সত্যজিৎ রায়) না থাকলে পড়াশোনায় তুখোড় এই কন্যে অভিনয়কে কোনওদিন পেশা হিসাবে বাছতেন না।
অভিনয় কেরিয়ার যেমন বর্ণময়, তেমনই আলোচিত শর্মিলার ব্যক্তিগত জীবন। এই বাঙালি কন্যে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন পতৌদির নবাব তথা ভারতীয় ক্রিকেট তারকা মনসুর আলি খান পতৌদিকে। বিয়ের সময় ধর্ম বদলে শর্মিলা হন আয়েশা। সম্ভ্রান্তশালী পরিবারের বউমা, সঙ্গে তিন সন্তানের জননী- সবকিছু সামলেও নিজের অভিনয় কেরিয়ার ম্লান হতে দেননি শর্মিলা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে শর্মিলার সম্পর্কের কাহিনিটা ঠিক কেমন? সেটা জানা আছে কী?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলা খোলসা করে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, তাঁর দাদার বংশধর আমরা। আমার ঠাকুরদার বাবা গুণীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যিনি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাই। তাঁরা দু’জনেই খুব ভালো পেইন্টার। জাপানি শিল্পীদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যাঁরা তুলে ধরেছিলেন তাঁদের প্রতিভা। আমার সম্পর্ক সেদিক থেকেই। তখন ঠাকুর পরিবার একে অন্যের সঙ্গে ভীষণই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একে অন্যকে চিনতেন। এখন সবটা একটু এদিক ওদিক হয়ে গিয়েছে।’
শর্মিলার দিদিমা ছিলেন ললিতা। তিনি আসলে রবীন্দ্রনাথের বড়দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি ছিলেন। হ্যাঁ, লতায়-পাতায় ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে শর্মিলার যোগ নিবিড়। বছর খানেক আগে পারিবারিক অ্যালব্য়াম থেকে লাল দিদি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ছবিও শেয়ার করেন শর্মিলা কন্যা সাবা আলি খান পতৌদি। মা বাঙালি, ঠাকুর পরিবারের বংশধর কিন্তু সইফ-সোহারা কতটা বাংলা জানেন? শর্মিলা জানান, ‘যতটুকু শেখানোর চেষ্টা করেছি ছেলেমেয়েদের শেখানোর। তবে সবটা যে পেরেছি, তা নয়। তবে বাংলার প্রতি আমার টান সবসময় থাকবে। সোহা বাংলা ছবিতে কাজ করেছে, তাই ও বাংলা একটু জানে। সইফ করেনি। তবে আমার পরিবার সম্পর্কে ওরা অবগত’।
১৯৬৪ সালে কাশ্মীর কি কলি ছবির সঙ্গে হিন্দি চলচ্চিত্র হাতেখড়ি তাঁর। ‘আরাধনা’, ‘চুকে চুপকে’, ‘অমর প্রেম’-এর কালজয়ী ছবির অংশ থেকেছেন শর্মিলা। ১৯৬৯ সালে মনসুর আলি খান পতৌদিকে বিয়ে করেন শর্মিলা। তাঁদের তিন সন্তান- সইফ, সাবা এবং সোহা।
প্রসঙ্গত, সুমন ঘোষের ‘পুরাতন’-এর হাত ধরে বাংলা ছবিতে ফিরছেন শর্মিলা। এই ছবিতে শর্মিলার সঙ্গে স্ক্রিনশেয়ার করবেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে শ্যুটিংয়ের কাজ। ক্যানসার জয়ের পর এই ছবির সঙ্গে কামব্যাক করবেন শর্মিলা।