জনতার কণ্ঠ ডেস্ক: শসার কথা বলতেই যেন অবচেতন মনে ‘সালাদ’ শব্দটি এসে যায়। এর পেছনে অবশ্য সংগত কারণও রয়েছে। মূলত এর খাদ্যগুণের কারণেই এটি একটি উৎকৃষ্ট মানের সালাদ উপকরণ হিসেবে সমাদৃত। তবে রূপচর্চায়ও এর নানাবিধ ব্যবহারের কথা এখন আর কারও অজানা নয়।
ত্বককে মসৃণ, কোমল ও উজ্জ্বল করে তুলতে শসার জুড়ি নেই। এতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন কে রয়েছে; যা আমাদের ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের কোষে শক্তি জোগায়। ফলে আমাদের ত্বক হয়ে ওঠে স্থায়ীভাবে উজ্জ্বল, সুস্থ ও মসৃণ। পাশাপাশি এতে বিদ্যমান ভিটামিন কে এবং ভিটামিন সি আমাদের ত্বককে টান টান রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ বা বিভিন্ন ধরনের দাগ ও বলিরেখা সম্পূর্ণরূপে দূর হয়ে ত্বক থাকে মসৃণ ও আকর্ষণীয়।
সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মির কারণে আমাদের ত্বক বিভিন্ন সময়ে পুড়ে যায়। শসা ত্বকের এসব পোড়া দাগ দূর করে ত্বককে রাখে কোমল ও উজ্জ্বল। তাই প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শসা স্লাইস করে মুখের ওপর ঘষে নিলে কিংবা শসার রস দিয়ে আইস কিউব তৈরি করে তা ব্যবহার করলে ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যায়। এ ক্ষেত্রে বাইরে থেকে এসে তা মুখে ঘষে নিলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
পানিশূন্যতা রোধে শসার কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই নিয়মিত শসা ব্যবহারে ত্বকের কোষে পানিশূন্যতা কমে যায় এবং ত্বক থাকে সম্পূর্ণ সতেজ ও সুস্থ। তা ছাড়া শসার রস আমাদের ত্বকের মৃত কোষকে সরিয়ে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে।
নিয়মিত শসার রস ব্যবহারে ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা দূর করে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে। এতে আমাদের ত্বক অতিরিক্ত তেল চিটচিটে হয়ে যায় না। আবার এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ও ভিটামিন সি আমাদের ত্বক থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে দূর করে। ফলে ময়লা ও ধুলাবালি থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করা সহজ হয়।
ইদানীং প্রাপ্তবয়স্কদের অনেকেই ব্রণ সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাঁদের জন্য শসা হতে পারে একটি সময়োপযোগী সমাধান। কারণ, এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি ত্বকের কালো দাগ, ব্রণের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করে ত্বককে রাখে দাগমুক্ত ও সুন্দর। আজকাল শসার বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক শুষ্ক ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা অত্যন্ত কার্যকর। শসার রস শুষ্ক ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে করে মসৃণ এবং এটি ত্বককে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি দেয়। আবার চোখের ডার্ক সার্কেল দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
শসা মানেই সালাদ নয়: অনেক সময় চোখের ফোলা ভাব নিয়ে আমাদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত শসার স্লাইস চোখে দিয়ে ঘুমালে চোখের এ ফোলা ভাব অল্প দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে দূর করা সম্ভব। এতে চোখ আকর্ষণীয় ও সুন্দর দেখাবে। পাশাপাশি শসার রস ত্বকের জন্য টোনার হিসেবে কাজ করে। ফলে ত্বক টান টান থাকে। তাই এটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে ভাঁজ পড়ে যাওয়া কিংবা কুঁচকে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করা সম্ভব।