শিশুর ত্বকে অতিরিক্ত প্রসাধন ব্যবহার না করাই ভালো


শিশুর কোমল ত্বকে বা চুলে কী লাগানো উচিত আর কী লাগানো উচিত নয়, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন অনেক অভিভাবক। এই যেমন শর্ষের তেল। বহুল প্রচলিত এই তেলের ব্যবহার কিন্তু নানান কারণেই শিশুর জন্য ক্ষতিকর। আবার একটি নির্দিষ্ট বয়সে না পৌঁছানো অবধি বড়দের প্রসাধন ব্যবহারেও ত্বকে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
শিশুদের প্রসাধন সাবান, শ্যাম্পু, লোশন, পাউডার ও তেলেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। তবে যেটুকু প্রয়োজন, সেটুকু বেছে নিতে হবে খুবই সতর্কতার সঙ্গে। প্রসাধনসামগ্রী যেন অবশ্যই মানসম্মত হয়। যেসব প্রসাধন খুব মৃদু এবং যেগুলোতে অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা থাকে না, সেগুলোই বেছে নিতে হবে, এমনটাই বলছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সাঈদা আনোয়ার।
৮ বছর বয়সের আগে শিশুদের উপযোগী পণ্য ব্যবহার করতে হবে।
বয়স উপযোগী পণ্য: ৭ থেকে ৮ বছর বয়স হয়ে গেলেই সাধারণত বড়দের সাবান-শ্যাম্পু, লোশন, ক্রিম, তেল প্রভৃতি পণ্য ব্যবহার করতে পারবে শিশু। এর আগে অবশ্যই শিশুর উপযোগী পণ্য বেছে নিতে হবে। পণ্যের গায়ে যদি বয়সের সীমা লেখা থাকে, তাহলে সেটি মেনে চলুন। আর শিশুর বয়স এক মাস পার হওয়ার আগে নিতান্ত প্রয়োজন না পড়লে কোনো প্রসাধন প্রয়োগ না করাই ভালো।
অনেক সময় দেখা যায়, বাড়ির মুরব্বিরা তেল মালিশ করিয়ে শিশুকে খালি গায়ে খোলা হাওয়ায় রেখে দেন। এতে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে, এমনকি নিউমোনিয়াও হতে পারে। তাই এমনটি করা একেবারেই ঠিক না। সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে চুল ও ত্বক পরিষ্কার করাতে গিয়ে শিশুকে অতিরিক্ত সময় পানির সংস্পর্শে রাখবেন না। শিশুর ত্বকে বা মাথায় শর্ষের তেল লাগাবেন না। এটি ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। কখনোই শিশুর মাথায় তেল লাগিয়ে সারা রাত রেখে দেওয়া যাবে না। এতে মাথার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। শিশুর চুলে কন্ডিশনার লাগানোর প্রয়োজন নেই। কোনো প্রসাধনী প্রয়োগ করার পর লালচে দানা বা গুটি দেখা দিলে সেই পণ্য অবশ্যই বর্জন করুন।
শিশুদের জন্য সপ্তাহে ১ দিন সাবান, শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
শিশুর জন্য সপ্তাহে ১ দিন মাথায় তেল দেওয়াই যথেষ্ট। শিশুর চুলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। শ্যাম্পু করার মিনিট দশেক আগে মাথায় তেল দিতে হবে। সপ্তাহের একটি দিন শ্যাম্পু লাগানোই শিশুর জন্য যথেষ্ট। গরমের দিনে ১ দিন অন্তর সাবান লাগানো যেতে পারে। শীত শীত ভাব থাকলে ২ থেকে ৩ দিন অন্তর করালেও চলবে। শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অলিভ অয়েল, বেবি অয়েল, বেবি লোশন বা বেবি ক্রিম ব্যবহার করা যায়। অবশ্য শুষ্ক মৌসুম ছাড়া শিশুর ত্বকে এসব প্রসাধনের তেমন প্রয়োজনও পড়ে না। খেয়াল রাখবেন, শিশুর ত্বকে অতিরিক্ত প্রসাধন ব্যবহারে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *