দেশের বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেনের অনবোর্ড (অ্যাটেনডেন্ট) ও ক্যাটারিং সার্ভিস (খাবার সরবরাহ) সরকারবিরোধী লোকজন পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। ওই সব ট্রেনের সেবার মান ভালো নয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ অভিযোগ তোলেন কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২৬তম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, মো. শফিকুল আজম খান ও নাদিরা ইয়াসমিন জলি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, অভিযোগটি নিয়ে আলোচনা শেষে রেলওয়েতে কোন প্রক্রিয়ায় ঠিকাদার নিয়োগ করা হয় পরবর্তী বৈঠকে তার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর আগে বৈঠকে ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পার্বতী এক্সপ্রেসসহ বেশ কিছু অন্তঃনগর ট্রেনে অনবোর্ড অথবা কেটারিং সার্ভিস সরকারবিরোধী লোকজন চালাচ্ছে। ওই সব ট্রেনের সেবার মান দীর্ঘদিন যাবৎ মানসম্মত নয়।’ তিনি পরিচালনাকারীদের (লিজ গ্রহণকারীদের) চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি না করে নতুনভাবে তালিকাভুক্ত করে টেন্ডারের মাধ্যমে পরিচালনার পরামর্শ দেন।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেলওয়ের ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনার জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তির কার্যক্রম চলমান আছে। তালিকাভুক্তির পর আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ক্যাটারিং সার্ভিস প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ করা পাঁচটি ট্রেনের মধ্যে দুটি ট্রেনের অনবোর্ড সার্ভিস রেলওয়ের অ্যাটেনডেন্ট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। অন্য তিনটি ট্রেনের অনবোর্ড সার্ভিস বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। অনবোর্ড সার্ভিস পরিচালনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষের পরে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে অনবোর্ড সার্ভিস প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে বৈঠকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেড় বছর আগে দেশের সব রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের সুপারিশ করা হলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৩৫টি রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের টেন্ডার হয়েছে। ম্যুরালের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী সংযুক্ত করা হবে। তবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও সংক্ষিপ্ত জীবনী স্থাপনের পূর্বে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন ২৯টি ও পশ্চিমাঞ্চলের ২৮টি, মোট ৫৭টি স্টেশনের দর্শনীয় স্থানে ১০১টি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের জন্য ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়েছে। কাজটি অতি দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে। কমিটি সকল রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের সুপারিশ করেছে।