সমকামী বিয়ে বৈধতা পেলে এই ‘রোগ’ আরও ছড়াবে: আরএসএস
সমকামিতাকে ‘ব্যাধি’ আখ্যা দিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলো ভারতের ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ’ বা আরএসএস। এই ইস্যুতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। দেশজুড়ে সমকামিতার পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনাও হচ্ছে প্রচুর। এরইমধ্যে সরাসরি সমকামিতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো প্রভাবশালী এই সংগঠনটি। আরএসএস-এর দাবি, ‘সমকামিতা এক ব্যাধি এবং সমলিঙ্গের বিয়ে আইনি বৈধতা পেলে এ ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে’। এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে জানানো হয়েছে যে, নিজেদের এমন দাবিকে বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ করতে ৩১৮ চিকিৎসকের মতামত নিয়েছে আরএসএস। এসব চিকিৎসকের মধ্যে আছেন হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি ও আয়ুর্বেদের মতো ৮টি বিভিন্ন পদ্ধতির চিকিৎসক। সমীক্ষায় অংশ নেয়া চিকিৎসকদের ৭০ শতাংশ বলেছেন যে সমকামিতা একটি ব্যাধি। এদিকে ৮৩ শতাংশ চিকিৎসক জানিয়েছেন যে, সমলিঙ্গের যৌন সঙ্গম থেকে যৌন রোগ ছড়াতে পারে।
এই জরিপ প্রকাশ করেই সমকামিতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কট্টরপন্থী এই সংগঠনটি। আরএসএস বলছে, সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে, সমলিঙ্গের মধ্যে বিয়েকে বৈধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে কখনোই আর এই ‘রোগের’ নিরাময় হবে না।
‘সমকামী রোগীদের’ সুস্থ করে তোলার পরিবর্তে সমাজে আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরনের মানসিক ব্যাধির রোগীদের নিরাময়ের জন্য কাউন্সেলিংই সর্বোত্তম বিকল্প। সংগঠনটি আরও দাবি জানায় যে, ভারতে সমলিঙ্গ বিবাহে স্বীকৃতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে এ নিয়ে জনগণের মত নেয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, ভারতে সমকামী বিয়ের আইনি স্বীকৃতি বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে লাগাতার এই মামলার শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। এর আগে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক রায়দানের মাধ্যমে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃটিশ জমানার বহু পুরোনো আইনকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার আওতায় দু’জনের পূর্ণ সম্মতিতে সমকামী সম্পর্ক অপরাধ নয়। সেই পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও সমকামী বিয়ে এখনও আইনি বৈধতা পায়নি ভারতে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ নির্দেশনা জারি করে, বিভিন্ন হাই কোর্টে সমকামী বিবাহ সংক্রান্ত যাবতীয় পিটিশন মুলতবি করে তা শীর্ষ আদালতে পাঠানো হোক। তবে এরপরই ভারতজুড়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে।