জনতার কণ্ঠ ডেস্ক: সারা দেশে গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। সকালের দিকে রাজধানীর রায়েরবাজারে মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। তবে সকালের দিকে লাইনে খুব বেশি ভিড় বা বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।
সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডটির রায়েরবাজার কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে লোকজন টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে অপেক্ষা করছেন। লাইনে কোনো বিশৃঙ্খলা না থাকলেও পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সেন্টারের বাইরে শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছেন। তবে যাঁরা প্রবীণ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ—এমন লোকজনকে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে ঢোকানো হয়। এ ছাড়া ১০ জন করে নারী ও পুরুষকে পর্যায়ক্রমে টিকার জন্য কেন্দ্রের ভেতরে ঢোকানো হয়। কমিউনিটি সেন্টারের নিচতলায় পুরুষদের ও দ্বিতীয় তলায় নারীদের টিকা দেওয়া হয়।
রায়েরবাজারের বাসিন্দা পারুল বেগম। তিনি ফুটপাতে সবজি বিক্রি করেন। পারুলের টিকা কার্ড হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেশী একজনের মুঠোফোনে সেই টিকা কার্ডের ছবি তোলা ছিল। পরে পারুলের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী স্বেচ্ছাসেবকেরা বলেন, কারও কার্ড হারিয়ে গেলে ওই ব্যক্তি যদি মোবাইলে তোলা ছবি বা ফটোকপি দেখাতে পারেন, তাহলে তাঁর টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় টিকা গ্রহণকারীদের মুঠোফোনে খুদেবার্তা পৌঁছায়নি। এলাকাগুলোয় গভীর রাত পর্যন্ত মাইকিং করা হয়েছে। মাইকিং শুনেই টিকা নিতে গিয়েছেন মানুষ।
এমন একজন রায়েরবাজার গদিঘর এলাকার বাসিন্দা মো. জুয়েল হোসেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় মাইকে ঘোষণা দিতে শুনি যে আজকে টিকা দেওয়া হবে। সকাল ৬টায় কেন্দ্রে আসি।’ পরে সোয়া ১০টায় তিনি টিকা নেওয়ার সুযোগ পান।
রায়েরবাজার পানির পাম্প এলাকার বাসিন্দা মুকুলজান বেগম। প্রবীণ এই নারী ভোর সাড়ে পাঁচটায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েও ৫০ থেকে ৬০ জনের পেছনে ছিলেন। সকালে টিকা দেওয়া শুরুর আগে পুলিশ সদস্যরা এসে তাঁকে প্রথম ৩০ জনের মধ্যে টিকা দেওয়ার সুযোগ করে দেন। তিনি বলেন, ‘আমি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাছিলাম না। তহন পুলিশেরা আমাকে ভেতরে ঢোকার সুযোগ কইরা দেয়।’
আজ ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডের নির্ধারিত ৫৪টি কেন্দ্রেই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত তিন দিনের প্রতিদিন প্রতিটি কেন্দ্রেই প্রথম ডোজের দ্বিগুণসংখ্যক, অর্থাৎ ৭০০ জনকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। গত ৭ ও ৮ আগস্টে প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণকারীরা আজ টিকা নিচ্ছেন। গত ৯ ও ১০ আগস্টে টিকা গ্রহণকারীরা ৮ সেপ্টেম্বর এবং ১১ ও ১২ আগস্টে টিকা গ্রহণকারীরা ৯ সেপ্টেম্বর টিকা নেওয়ার সুযোগ পাবেন। যে কেন্দ্র থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছিল, একই কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়া যাবে।
ডিএনসিসির নির্ধারিত ৫৪টি টিকাকেন্দ্রে গত ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত একযোগে পরিচালিত গণটিকার আওতায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ জনকে কোভিড-১৯–এর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল।