হবিগঞ্জে আকলিমা আক্তার (২৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গত ২৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজিউড়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী ভেড়িখাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় কয়েকজনের সহায়তায় পরকীয়া প্রেমিক আনোয়ার হোসেন ওরফ সোবাহান তাকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১ জানুয়ারি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আনোয়ারকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল। তার বাড়ি সদর উপজেলার রাজিউড়ায়। গ্রেফতারের পর সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আনোয়ারের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী জানান, ৭-৮ মাস আগে আকলিমা আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে পেশায় কাঠমিস্ত্রী আনোয়ারের পরিচয় হয়। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ৬-৭ মাস আগে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে আকলিমার সঙ্গে মুঠোফোনে নিয়মিত কথাবার্তা শুরু করে সে। তবে বৈবাহিক অবস্থা আকলিমার কাছে গোপন রাখে। মাঝেমধ্যে তারা ঢাকায় দেখা করতো। একপর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে আকলিমা বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে কালক্ষেপণ করতে থাকে আনোয়ার।
ওসি বলেন, কিছুদিন গেলে প্রেমিকা আকলিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আনোয়ার। মাস চারেক আগে গার্মেন্টস কারখানায় কাজের জন্য আকলিমা ঢাকার গাজীপুরে চলে যান। গত ২৩ ডিসেম্বর আনোয়ার তাকে ফোন করে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে হবিগঞ্জে যেতে বলে। সে অনুযায়ী আকলিমা ওইদিন সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের অলিপুরে যান। সেখান থেকে আনোয়ার তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে রাখে। বিষয়টি আশপাশের কাউকে বুঝতে দেওয়া হয়নি।
একদিন পর অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর ভোরে বিয়ের কথা বলে আকলিমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আসামি। পথিমধ্যে কয়েকজনের সহায়তায় খালের পাড়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ সেখানেই ফেলে রাখা হয়।
ওসি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছিল আসামি আনোয়ার ওরফে সোবাহান। এদিকে, লাশ উদ্ধারের পর হত্যাকাণ্ড সন্দেহে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বাস টিকেট ও কল লিস্টের সূত্র ধরে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।
তবে ঘাতক নিজেই অপরাধ স্বীকার করেছে এবং তদন্ত শেষে শিগগিরই আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আমির উদ্দিন বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।