জনতার কণ্ঠ প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীতে একটি ৩৮ কেজি ওজনের বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে মাঝনদীতে পাবনা অঞ্চল থেকে আসা জেলেদের জালে মাছটি ধরা পড়ে। মাছটি পরে উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে নিলামের মাধ্যমে ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাগাড় একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ ধরনের মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলেও গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে মাঝেমধ্যেই ধরা পড়ছে বিপন্ন প্রজাতির বাগাড়। দৌলতদিয়া ঘাটে প্রকাশ্য নিলামে হাঁকডাক ছেড়ে বিক্রিও করা হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েক মৎস্যজীবী জানান, আজ সকাল নয়টার দিকে পাবনার ঢালারচর এলাকার জেলে আক্কাছ শেখ বাহিরচর দৌলতদিয়া থেকে জাল ফেলা শুরু করেন। প্রায় সাত কিলোমিটার ভাটিতে যাওয়ার পর জালে টান আঁচ করতে পারেন। জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলতেই দেখেন, বড় একটি বাগাড়। এটি দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটে নিয়ে এলে আড়তদার বাবু সরদার জানান, মাছটির ওজন ৩৮ কেজি। বিশাল বাগাড়টি তিনি নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে মাছটি কেনেন।
বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড়কে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
শাহজাহান শেখ বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে নদীতে বড় বাগাড় ধরা পড়ার খবর পাই। ফেরিঘাটে বাগাড়টি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে নিই। পরে মুঠোফোনে ঢাকার গুলশান এলাকার মনির খান নামের ঠিকাদারের কাছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় লাভে ৫১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করি। দুপুর ১২টার দিকে মাছটি ঢাকার এক পরিবহনে তুলে দিয়েছি।’
বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড়কে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী বিপন্ন প্রাণী ধরা বা কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএনের লাল তালিকায়ও রয়েছে বাগাড়ের নাম।
তবে এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা শাহ মো. শাহারিয়ার জামান বলেন, বড় বাগাড় ধরা বা খাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো সমস্যা নেই। তবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছোট বাগাড় ধরা যাবে না। বাগাড়কে বিপন্ন মাছ হিসেবে চিহ্নিত করে তা ধরতে কোনো নিষেধাজ্ঞা এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে আসেনি বলে তিনি জানান।