৬টি সিনেমা বানিয়েও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী সেলিব্রিটি জর্জ লুকাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ২০ অক্টোবর, ২০২৪ (জনতার কণ্ঠ) : চলচ্চিত্র দুনিয়া নিয়ে মানুষের প্রচলিত ধারণা, শুধু তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রী ও প্রযোজকরাই মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করেন। সেখানে আলোচনায় থাকেন মুষ্ঠিমেয় চিত্রপরিচালকও। এমনটা দেশীয় চলচ্চিত্র ও বলিউড-হলিউডে বিদ্যমান। তবে অবাক করা বিষয় হলো এই মুহূর্তে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী চলচ্চিত্র সেলিব্রিটি কিন্তু একজন চলচ্চিত্র পরিচালকই।

বলছি হলিউড পরিচালক জর্জ লুকাসের কথা। তিনি ৯৪০ কোটি ডলার সম্পত্তির মালিক। যদিও তিনি জীবনে মাত্র ছয়টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। গত ২০ বছরে তিনি কোনো চলচ্চিত্র পরিচালনা করেননি। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই চলচ্চিত্র সেলিব্রিটি ‘স্টার ওয়ার্স’ ও ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’ ফ্র্যাঞ্চাইজির স্রষ্টা। ব্লুমবার্গ-এর তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের অক্টোবর হিসাবে লুকাসের সম্পত্তিরর পরিমাণ ৭৭০ কোটি ডলার। অন্যান্য সূত্র অনুযায়ী, তার সম্পত্তির পরিমাণ আরও বেশি- ৯৪০ কোটি ডলার পর্যন্ত।

জর্জ লুকাস সমসাময়িক যেকোনো তারকার চেয়ে অনেক ধনী। সম্পত্তির দিক থেকে তিনি জে জেড, ম্যাডোনা, টেলর সুইফট ও রিহানা-কে  পিছনে ফেলেছেন। মজার ব্যাপার হলো, পরিচালক হিসেবে পরিচিত জর্জ লুকাস জীবনে মাত্র ছয়টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। সেগুলো হচ্ছে: ‘টিএইচএক্স ১১৩৮’ (১৯৭১), ‘আমেরিকান গ্রাফিতি’ (১৯৭৩), এবং ‘স্টার ওয়ার্স’ ফ্রাঞ্চাইজের চারটি ছবি—যার মধ্যে ১৯৭৭ সালের প্রথম চলচ্চিত্র ও প্রিক্যুয়েল ট্রিলজি রয়েছে।

১৯৭১ সালে ২৭ বছর বয়সে ‘টিএইচএক্স ১১৩৮’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন জর্জ লুকাস। ছবিটি স্লিপার হিট হয়- অর্থাৎ শুরুতে তেমন আশা জাগাতে না পারলেও পরে ধীরে ধীরে সাফল্য পায়। এর দুই বছর পর তার পরিচালনায় ‘আমেরিকান গ্রাফিতি’ও হিট হয়। তবে লুকাস খ্যাতির তুঙ্গে ওঠেন ১৯৭৭ সালে মুক্তি পাওয়া ব্লকবাস্টার ‘স্টার ওয়ার্স’ দিয়ে। জর্জ লুকাস সর্বশেষ পরিচালনা করেন ‘স্টার ওয়ার্স: এপিসোড থ্রি-রিভেঞ্জ অভ দ্য সিথ’ ছবি। এটি ২০০৫ সালে মুক্তি পায়। জর্জ লুকাসের এই সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার শক্তিশালী নেতৃত্বগুণ, ভিশন এবং সেই ভিশনকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য বুদ্ধিমান মানুষদের পরিচালনা করার ক্ষমতা এর অন্যতম কারণ। জর্জ লুকাসের প্রযোজনা কোম্পানি লুকাসফিল্মে বিভিন্ন বিভাগ প্রায়ই একে অপরের সঙ্গে মিলে কাজ করতে। যেমন, কম্পিউটার বিভাগ স্পেশাল ইফেক্ট বা গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করত।

লুকাসফিল্মের ভিএফক্স ও অ্যানিমেশন স্টুডিও ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইট অ্যান্ড ম্যাজিকেও কর্মীদের নির্দিষ্ট কোনো কাজ দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হতো না। ফলে তারা কোনো নির্দিষ্ট বিভাগের কাজে আটকে থাকতেন না। কোম্পানিটির কর্মীরা প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজের দায়িত্ব পেতেন। এভাবে জনবলকে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন ভীষণ সাহসী হওয়া, যা লুকাসের ব্যক্তিত্বের ট্রেডমার্ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *