মুফতি আবদুল্লাহ নুর
আসমান-জমিনের চেয়ে ভারী হবে যে আমল
আল্লাহ মানুষকে যত জিকির শিক্ষা দিয়েছেন তার মধ্যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সবচেয়ে মূল্যবান। পরকালে মিজানের পাল্লায় এই জিকিরের ওজন আসমান-জমিনের চেয়েও বেশি ভারী হবে। যেমন— হাদিসে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বসে ছিলাম। তখন বনভূমি থেকে সিজান রঙের (এক প্রকার মাছ) জুব্বা পরিহিত এক ব্যক্তি এসে নবী (সা.)-এর মাথার কাছে দাঁড়াল এবং বলল, তোমাদের সাথি প্রত্যেক আরোহীকে অবদমিত করেছে বা আরোহীদের অবদমিত করার সংকল্প করেছে এবং প্রত্যেক রাখালকে সমুন্নত করেছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) তার জুব্বার হাতা ধরে বলেন, আমি কি তোমাকে নির্বোধের পোশাক পরিহিত দেখছি না? অতঃপর তিনি বলেন, আল্লাহর নবী নুহ-এর ইন্তেকালের সময় উপস্থিত হলে তিনি তাঁর পুত্রকে বলেন, আমি তোমাকে একটি উপদেশ দিচ্ছি। আমি তোমাকে দুটি বিষয়ের আদেশ দিচ্ছি এবং দুটি বিষয় নিষেধ করছি। আমি তোমাকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর নির্দেশ দিচ্ছি। কেননা সাত আসমান ও সাত জমিনকে যদি এক পাল্লায় তোলা হয় এবং অপর পাল্লায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তোলা হয়, তবে সেই তাওহিদের পাল্লাই ভারী হবে। সাত আসমান ও সাত জমিন যদি একটি জটিল গ্রন্থির রূপ ধারণ করে, তবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি’ তা চুরমার করে দেবে। কেননা তা প্রত্যেক বস্তুর নামাজ এবং সবাই এর বদৌলতে রিজিক লাভ করে থাকে। আর আমি তোমাকে বারণ করছি শিরক ও অহংকারে লিপ্ত হতে।
আমি বললাম অথবা বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! শিরক তো আমরা বুঝলাম, তবে অহংকার কী? আমাদের মধ্যকার কারো যদি কারুকাজখচিত চাদর থাকে, আর তা পরিধান করে? তিনি বলেন, না। সে আবার বলল, যদি আমাদের কারো সুন্দর ফিতাযুক্ত সুন্দর একজোড়া জুতা থাকে? তিনি বলেন, না। সে পুনরায় বলল, যদি আমাদের কারো আরোহণের একটি জন্তুযান থাকে? তিনি বলেন, না। সে বলল, যদি আমাদের কারো বন্ধু-বান্ধব থাকে এবং তারা তার সঙ্গে ওঠাবসাও করে? তিনি বলেন, না। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! তাহলে অহংকার কী? তিনি বলেন, সত্য থেকে বিমুখ থাকা এবং মানুষকে হেয় জ্ঞান করা। (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৫০)
আল্লাহ সবাইকে বিশুদ্ধ মনে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।