ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না: হাছান মাহমুদ

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদছবি: সংগৃহীত
দেশের সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে বলে জানালেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এই আইন বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। তবে এতে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সাংবাদিকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে অবশ্যই নজর দেওয়া প্রয়োজন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদসহ কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের এ আইন আমেরিকার আইনের চেয়ে অনেক সহজ। আমেরিকায় ডিজিটাল অপরাধের জন্য ২০১৫ সালের আইনটি ২০২২ সালে সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এত কারাদণ্ড নেই। আমেরিকার আইনে ডিজিটাল অপরাধের প্রেক্ষিতে যদি কারও মৃত্যু হয়, সে ক্ষেত্রে শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নও ২০২২ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তার নতুন আইন করেছে এবং প্রায় সব দেশেই এই আইন আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও আমাদের চেয়ে কঠিন। সুতরাং এই আইন বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। তবে এতে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সাংবাদিকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে অবশ্যই নজর দেওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও কী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে, আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি।’
বিএনপি জোটের সবাইকে নিয়ে ঘোষণাপত্র দেওয়ার চেষ্টা কেন সফল নয়, এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যামিবার আকার যেমন মাঝেমধ্যে বড় হয় আবার ছোট হয়, বিএনপির জোটও হচ্ছে সে রকম। অ্যামিবা যেমন নিজে ভাগ করে দুটা হয়, আবার চারটা হয়, বিএনপির জোটও ঠিক সে রকম। দেখা গেল, ২২–দলীয় জোট ছিল, হলো ১২–দলীয় জোট আবার কদিন পরে শুনি তারা ৫৪–দলীয় জোট। এ জন্য তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।’
বিএনপিতে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম সবাই আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে একত্র করে ঘোষণাপত্র দেওয়া তো কঠিন কাজ। বিএনপির মধ্যে আবার কয়েকটি ভাগ, চেয়ারপারসনের ধারা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের ধারা, মির্জা ফখরুল সাহেবের ধারা, সংস্কারপন্থীদের ধারা, সব ধারাকে এক করা সেটিও কঠিন কাজ।’
এর আগে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধবিষয়ক সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের লেখনীর ফলেই রাষ্ট্র এবং সমাজের পক্ষে অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হয়। সাংবাদিকেরা সাহস নিয়ে কাজ করলে আমি মনে করি সমাজ উপকৃত হবে, রাষ্ট্র উপকৃত হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *