আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৩২,০০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) থেকে সহজ শর্তে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে একটি নতুন কাঠামোগত সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এ চুক্তিটি কোরিয়ান সরকারকে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকারকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করতে আইনি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
কোরিয়ার ইঞ্চনে অনুষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বোর্ড অব গভর্নরস এর ৫৫ তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে আজ (বৃহস্পতিবার) এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। কোরিয়ার অর্থনীতি বিভাগের প্রথম ভাইস মিনিস্টার কিসুন বাং এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান নিজ নিজ দেশের পক্ষে এতে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া, ঢাকা মেট্রোরেল লাইন-৪ (ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড হয়ে নারায়ণগঞ্জ) এবং সিএনজি বাস ক্রয় ও রেলওয়ে সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ- প্রকল্পের জন্য ইডিসিএফ লোন এগ্রিমেন্ট বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)ও স্বাক্ষর করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ইডিসিএফ ঋণ পরিশোধের সময়কাল ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ড সহ ৪০ বছর। বার্ষিক সুদের হার ০.০১% থেকে ০.০৫%। চুক্তি অনুসারে, এর আওতাধীন প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতে দুই সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে, নতুন এই কাঠামোগত সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে কোরিয়ার অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট এইড (ওডিএ) এর দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাপক হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস বলছে, বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং দেশটির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পরিপ্রেক্ষিতে যথেষ্ট পরিমাণে সহায়তা বৃদ্ধির সাহসী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোরিয়ান সরকার।
ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন এ সম্পর্কে মানবজমিনকে বলেন, “দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে একটি নতুন ইডিসিএফ কাঠামোগত সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করা বিশেষভাবে অর্থবহ। বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের পরিমাণ যথেষ্ঠ বৃদ্ধির ফলে, কোরিয়া বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোতে সহায়তা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের ক্রমাগত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। এই ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা বাংলাদেশের জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যেমন পরিবহন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ানোর অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে আমি আশা করি।”