প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিমা মানে হলো আমানত। আমি একটা আমানত রাখছি। সেই আমানত যেন সময়মতো মানুষ পেতে পারে। আবার এটা পেতে গিয়ে যেন কোনো ঝামেলা পোহাতে না হয়। কেউ যেন দুই নম্বরি করতে না পারে সেটাও দেখতে হবে। তারা (বিমাকারী) টাকাটা যেন পান, কোনো হয়রানির শিকার যেন না হন। যেটা গ্রাহকের প্রাপ্য সেটা যেন সহজে পাওয়া যায়, সে ব্যবস্থাও করতে হবে। ’
মঙ্গলবার ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২২’-উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
এ সময় বিমা খাতকে ডিজিটালাইজড করাসহ এর সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বিমা ব্যবস্থা আমাদের দেশেও চালু হোক সেটাই আমরা চাই। কেউ যেন দুই নম্বরি করতে না পারে সেটাও দেখতে হবে। তার (বিমাকারী) টাকাটা যেন পান, কোন হয়রানির শিকার যেন না হয়। এই সেবাটা যদি মানুষ হাতের কাছে পায় তাহলে অনেকে কিন্তু তার জীবনে নিশ্চিন্ত হতে পারবে। সেজন্য সরকারি-বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে বিমার বিষয়টি আরও ভালোভাবে প্রচার হওয়া দরকার বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, এ ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ বাড়তে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। না করলে কী ক্ষতি হতে পারে, আর করলে কী লাভ হতে পারে। এগুলো মানুষের কাছে আরও ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে। জনগণকে আরও উৎসাহিত করতে হবে। এটাই আমার একটা অনুরোধ থাকবে।
মিথ্যা ঘটনা রটিয়ে বিমা কোম্পানি থেকে টাকা নিতে চাওয়া প্রতারকদের সর্তক করেন শেখ হাসিনা। বলেন, এখানে আমি একটা বিষয় বলব যেটা আমি ছোটবেলা থেকে দেখেছি। একটা ঘটনা বলি – পাটের গুদামে হঠাৎ আগুন লেগে যেত, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সব পাট নাকি পুড়ে যেত। তখন বিমা থেকে বিরাট অঙ্কের টাকা নিত। তো একবার এটা খোঁজ করে দেখা গেল আসলে মালিক পাট বিক্রি করে আগুন লাগিয়ে দিত। এরপরে একটা বিশাল অঙ্কের টাকা দাবি করে বসতো। একই ঘটনা আমি পেয়েছি গার্মেন্টস সেক্টরেও।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিমা খাতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য পাঁচজনকে ‘বিমা পদক’ এবং দুই প্রতিবন্ধী শিশুকে ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমা পলিসি’ প্রদান করেন।