বৃটেনের রাষ্ট্র-চালিত জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বিশ্বে প্রথম এমন একটি ইনজেকশন দিতে চলেছে যা দেশের শত শত ক্যান্সার রোগীকে আশার আলো দেখাতে পারে। চিকিৎসার দীর্ঘ সময় তিন চতুর্থাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে। মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (MHRA) থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর, এনএইচএস ইংল্যান্ড বলেছে যে শত শত রোগী যাদের ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়েছে, তারা অ্যাটেজোলিজুমাবের ইনজেকশন গ্রহণ করতে পারে, যা ত্বকের নিচে দেয়া হয়।
রয়টার্সের সাথে কথা বলার সময় ওয়েস্ট সাফোক এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের কনসালট্যান্ট অনকোলজিস্ট ডাঃ আলেকজান্ডার মার্টিন বলেছেন, ”এই অনুমোদনটি আমাদের রোগীদের জন্য কেবল সুবিধাজনক এবং দ্রুত যত্ন প্রদানের অনুমতিই দেবে না, পাশাপাশি আমাদের টিমকে সারা দিনে আরও বেশি সংখ্যক রোগীদের চিকিৎসার পথ প্রশস্ত করবে। এনএইচএস ইংল্যান্ড জানিয়েছে যে অ্যাটেজোলিজুমাব, যাকে টেসেন্ট্রিকও বলা হয়, সাধারণত রোগীদের শিরায় দেওয়া হয়। যার অর্থ ওষুধ সরাসরি একটি ড্রিপের মাধ্যমে শিরায় পৌঁছে যায়। এতদিন শিরার মাধ্যমে রোগীর দেহে ওষুধ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগতো। রোচে প্রোডাক্টস লিমিটেডের মেডিকেল ডিরেক্টর মারিয়াস স্কোল্টজ বলেছেন, নতুন ভ্যাকসিন মাত্র সাত মিনিটেই সেই কাজ করে দেবে। রোচে প্রোডাক্টস লিমিটেডের ‘অ্যাটেজোলিজুমাব’, একটি ইমিউনোথেরাপির ওষুধ যা রোগীদের দেহে ক্যান্সার কোষ খুঁজতে এবং ধ্বংস করতে সক্ষম। বর্তমানে, ট্রান্সফিউশনের মাধ্যমে ফুসফুস, স্তন, যকৃত এবং মূত্রাশয় সহ বিভিন্ন ক্যান্সারে ভুগছেন এমন রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এনএইচএস ইংল্যান্ড জানিয়েছে যে তারা আশাবাদী ৩৬০০ মতো ক্যান্সার রোগী ইংল্যান্ডে প্রতি বছর অ্যাটেজোলিজুমাবের মতো সাশ্রয়ী ইনজেকশনটি বেছে নেবে। রোগীরা অ্যাটেজোলিজুমাবের সংমিশ্রণে শিরায় কেমোথেরাপি গ্রহণ করলে তারা ট্রান্সফিউশনের চিকিৎসাও চালাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের সাথে কথা বলার সময়, এনএইচএস ইংল্যান্ডের ক্যান্সারের জাতীয় পরিচালক অধ্যাপক পিটার জনসন বলেছেন যে এই পদক্ষেপটি রোগীদের জন্য সবচেয়ে উন্নত ক্যান্সারের চিকিৎসার দরজা খুলে দিয়েছে।
নতুন ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর শত শত রোগীকে হাসপাতালে কম সময় ব্যয় করতে হবে এবং কেমোথেরাপি ইউনিটগুলির ওপর চাপও অনেকটা হালকা হবে। ক্যান্সার রোগীদের জন্য জীবনের সর্বোত্তম মান বজায় রাখা অত্যাবশ্যক, তাই দ্রুত ত্বকের নিচে ইনজেকশনের প্রবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন পিটার জনসন।