আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপি’র গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার শক্তি ও সামর্থ্য নেই বলেই তারা বরাবরের মতো অগ্নি-সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। তিনি বলেন, তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো অগ্নি-সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্দয় আগুনের লেলিহান শিখায় পোড়াচ্ছে সারা দেশ এবং মেতে উঠেছে নির্বিচার ভাঙচুর ও সহিংসতায়। গতকাল আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
এতে বলা হয়, তথাকথিত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েও বিএনপি তার চিরাচরিত নির্লজ্জ মিথ্যাচারের ধারা অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অগ্নি-সন্ত্রাস, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করা, মানুষ হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। তথাকথিত সরকার পতনের আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় তাদের অন্তরের জ্বালা কয়েকগুণ বেড়েছে। ব্যর্থতার সেই আগুনে তারা বাংলার জনগণের আগামীর সম্ভাবনাকে পুড়িয়ে ছাই করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের অগ্নি-সন্ত্রাস থেকে জীবন্ত ও ঘুমন্ত মানুষ, নারী ও শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছে না। গণতন্ত্রের নামে বিএনপি লাশের রাজনীতি করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ দেশের রাজনীতিতে মানুষ পুড়িয়ে মারার যে পৈশাচিকতার প্রচলন বিএনপি করেছে, তা সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিপন্থি। সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
জনগণের নিরাপত্তা সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি নেতারা ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের নামে লাগাতার মিথ্যা, অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করছে এবং তাদের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশনা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতারা তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও গুমের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছেন। বিএনপি’র সন্ত্রাসী ও ক্যাডার বাহিনীর যারা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সন্ত্রাস ও নাশকতা চালাচ্ছে, জনগণের জানমালের ওপর হামলা করছে, তারা নিজেরাই গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকছে। অথচ বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো গুমের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজনৈতিক নেতাকর্মী বিবেচনায় নয়, কেবল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরই গ্রেপ্তার করছে। কোনো সন্ত্রাসী আত্মগোপনে থাকলে, তার দায় সরকারের ওপর চাপানো যায় না। আওয়ামী লীগ কখনো গুম, খুন, অগ্নি-সন্ত্রাস ও বিরোধী দল দমনের রাজনীতি করে না। গুম, খুন, সন্ত্রাসের রাজনীতি হলো বিএনপি’র মজ্জাগত আদর্শ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান এ দেশে গুম ও খুনের অপরাজনীতির প্রচলন করেছিল। তৎকালীন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুকে গুমের মধ্যদিয়ে এই ধারার সূচনা করে বিএনপি। সামরিক স্বৈরশাসক জিয়া ১৯৭৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ের আওয়ামী লীগের দেড় শতাধিক সংসদ সদস্যকে জেলে বন্দি রেখে নির্বাচন আয়োজন করেছিল এবং আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপি’র প্রার্থিতা বাতিল করে প্রহসনের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০১-০৬ বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট আমলে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ। তারা জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণবিরোধী অপশক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং সন্ত্রাস, নাশকতা, নৈরাজ্য ও গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সমৃদ্ধির চলমান অগ্রগতিকে যেকোনো মূল্যে সমুন্নত রাখবে বাংলার জনগণ