‘ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের অনেকাংশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে- প্রধানমন্ত্রী

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন, যেখানে মূলত তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের অনেকাংশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক সূচকে। এর পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে তরুণদের উদ্যম। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের কথা শুনতে চান, নিজের ভাবনার কথাও তাদের জানাতে চান।
গত শুক্রবার সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ‘লেটস টক’ সিরিজের ৫৩তম পর্বে উপস্থিত হয়ে সেই সুযোগ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারাদেশ থেকে বাছাই করা পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ উদ্যোক্তা, চেঞ্জমেকার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর বা ইনফ্লুয়েন্সার, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, ট্রান্সজেন্ডার, পেশাজীবী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত প্রায় ২৫০ জন তরুণ এতে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে তারা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন ও নানা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে এই আলোচনাটি সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে।
এবারের ‘লেটস টক’-এ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করেছেন। এটি বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ রূপরেখার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ জনশুমারির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪ ভাগের ১ ভাগ তরুণ, যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। সংখ্যায় তা ৪ কোটি ৭৪ লাখের বেশি। এই জনমিতিকে কাজে লাগাতে তরুণদের মতকে প্রাধান্য দিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মূলত এ কারণেই তরুণদের সঙ্গে দেশের নীতি নির্ধারণী বিষয়ে আলোচনা, তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলো সরাসরি জানা এবং দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আলোচনার জন্য তরুণদের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জানুয়ারি, আর ২৭ ডিসেম্বর ইশতেহার ঘোষণা করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এতে তরুণদের উদ্দেশ্য করেও নানাবিধ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
তরুণরা তাদের আগ্রহ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত প্রশ্নও করেন। যেমন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মারিয়ার কাছে গ্রামের জীবনযাপন বেশ আকর্ষণীয়। প্রধানমন্ত্রী গ্রামে গিয়ে থাকতে চান কিনা, এমন প্রশ্ন করেন তিনি।
ফুড ভ্লগার রাফসান জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর নিজের সেরা রান্না কোনটি। এছাড়া যখনতখন বাইরের খাবার খেতে চাইলে সেই সুযোগ তিনি পান কিনা।
হুইলচেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নূর নাহিয়ান জানতে চান, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বা সর্বজনীনগম্যতা নিশ্চিত করতে সরকারের পরিকল্পনা কী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সংগীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় তাসরিফ খান জানতে চান, দেশের পর্যটনখাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ কোনো ভাবনা আছে কিনা।
তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী মনীষা মীম জানতে চান, সমাজকে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
কয়েকজন তরুণ উল্লেখ করেন, নিজে প্রধানমন্ত্রী হলে তারা দেশের কোন কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনতেন। এছাড়া নারী অধিকার, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি, দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, সরকারি কর্মচারিদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া সহ বিভিন্ন বিষয়ে তরুণরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে তরুণদের সেতুবন্ধন গড়ে দিতে ২০১৪ সাল থেকে ইয়াং বাংলা ‘লেটস টক’ শিরোনামে এ আয়োজন করে আসছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *