পদবঞ্চিত কর্মকর্তা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে ভূষিত মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী

আউলিয়া বেগম আলো : পদবঞ্চিত কর্মকর্তা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে ভূষিত মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। কথা ও কাজের পরিশীলিত পরিমার্জিত, ব্যক্তিত্বের অধিকারী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-এর সচিব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তিনি কাজের ছন্দ বুঝেন, কাজের আনন্দ বুঝেন, কাজের গুরুত্ব বুঝেন। তাইতো তিনি একজন পজেটিভ আমলা। স্বচ্ছ ও আধুনিক চিন্তা চেতনার ও বিশ্বাসের মানুষ তিনি। সর্বপোরি তিনি চৌকশ কর্মকর্তা। পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে তড়িৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার জুড়ি নেই। সততা নিষ্ঠার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের মাধ্যমে হাঁটিহাঁটি পা পা করে তিনি এতটুকু এগিয়েছেন। তিনি জনপ্রিয় একজন মেধাবী আমলা, কথা ও কাজে সমান পারদর্শী। আন্তরিকতায় ভরাই শুধু নন একজন সাদা মনের সুন্দর মনের মানুষ তিনি। অনেক বড় মাপের মানুষ হলেও এক অসাধারণ সারল্য ও তারুণ্য ধরে রেখেছেন তিনি তার কর্মে ও আদর্শে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সম্প্রতি তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন।
জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পদবঞ্চিত ছিলেন মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। সরকারের যুগ্ম সচিব থাকাকালে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি তাকে। এমনকি কনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে অধস্তন করে রাখা হয়েছিল তাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যুগ্ম সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করা হয় তাকে। এরপর সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।
মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ৬ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যোগদান করেন। বিসিএস প্রশাসন সার্ভিসের সদস্য হিসেবে তিনি ১৯৯৪ সালে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাঠ প্রশাসনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। চাকরিকালে তিনি সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও আরডিসি হিসেবে ভূমি প্রশাসন, ম্যাজিস্ট্রেসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ভাবন ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
এর আগে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), আইসিটি অধিদপ্তর, আইসিটি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে উপ-পরিচালক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একজন পেশাদার সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে জনস্বার্থ পূরণের স্বপ্ন রয়েছে তার। বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির বিবর্তন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বিশ্ব পরিস্থিতি, নীতি প্রণয়ন, জনপ্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল অর্থনীতি নেতৃস্থানীয় স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ে তার আগ্রহের ক্ষেত্র।
পেশাগত জীবনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিশেষত, তিনি চীন প্রজাতন্ত্রের সান ইয়েৎ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর এবং যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা অর্জন করেন। প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট আমেরিকা থেকে তিনি চগচ ঈবৎঃরভরবফ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি সুইস ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এম এস সি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। এছাড়াও তিনি আইন ও প্রশাসন কোর্সের শ্রেষ্ঠ ট্রেইনি অফিসার হিসেবে বিসিএস প্রশাসন একাডেমি থেকে মহাপরিচালক পদক লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে অ্যাডভান্সড কোর্স অন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এসিএডি) বিষয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ, সেমিনার, কর্মশালায় অংশগ্রহণ এবং পেশাগত উন্নয়নের উদ্দেশ্যে বিশ্বের অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। তন্মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, ডেনমার্ক ইত্যাদি ইউরোপীয় দেশ, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশসমূহ এবং সার্কভুক্ত দেশসমূহ উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিবাহিত এবং দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ডাঃ মাহবুবা জাহান লোটাস ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এবং বিশিষ্ট সোনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *