লাখে ক্যান্সারে আক্রান্ত ১০৬ জন, রয়েছে ৩৮ ধরন
দেশে বর্তমানে যত মানুষ মারা যায়, তার ১২ শতাংশই ক্যান্সার আক্রান্ত। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির চিকিৎসা পেয়েছিলেন। ৭ দশমিক ৪ শতাংশ রোগী ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পরে কোনো চিকিৎসা না নিয়েই মারা গেছেন। মৃত রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন ফুসফুস, শ্বাসনালি ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত।
বাংলাদেশে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের করা এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ হয়। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের দুই লক্ষাধিক মানুষকে এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা এবং বিএসএমএমইউ এই গবেষণায় অর্থায়ন করেছে।
গবেষক দলের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান জানান, দেশে বর্তমানে প্রতি লাখে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৬ জন। প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন লাখে ৫৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ফুসফুস, লিভার ও শ্বাসনালির ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বেশি। গবেষণায় বলা হয়, দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় মানুষ। এর মধ্যে স্তন, মুখ, পাকস্থলী, শ্বাসনালি ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বেশি। ক্যান্সার রোগীদের ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী। ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ স্তন ক্যান্সারের রোগী। ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। পাকস্থলী ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ, স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ফুসফুস, শ্বাসনালি ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, যেসব গবেষণা দেশের মানুষের কল্যাণে আসে, রোগীদের উপকার হবে, সেসব ক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।