আমি ‘বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরী’ প্রতিযোগিতায় ছিলাম নিজের আগ্রহে কাজ শুরু করি

সুস্মি রহমান

শুক্রবার দেশের ২০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে নতুন সিনেমা ‘দায়মুক্তি’। বদিউল আলম পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন সুস্মি রহমান। এটি তাঁর অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। 

প্রশ্ন: নির্মাণের অনেক পর মুক্তি পেল ‘দায়মুক্তি’। কেন?

সুস্মি রহমান : এই ছবির শুটিং আমরা ২০১৯ সালে করেছি। তখন টানা শুটিং ও ডাবিং করেছি। সব কাজ যখন শেষ হয়, তখন দেশে করোনা শুরু হয়। এরপর আরও নানা ইস্যু সামনে আসে। সেসব কারণে ছবিটির মুক্তির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তবে দায়মুক্তি পারিবারিক ও সামাজিক পটভূমির ছবি। দেশের আপামর পরিবারের গল্প। আমার কাছে গল্পটা সব সময় প্রাসঙ্গিক মনে হয়। তাই ছবিটি যখনই মুক্তি পাবে, তখনই যথাযথ। মনে হচ্ছে, দেরিতে মুক্তি পাওয়ায়ও ভালো কিছু হবে।

সুস্মি রহমান
প্রশ্ন :  আপনার অভিনীত চরিত্রটি কেমন?

সুস্মি রহমান : আমার চরিত্রের নাম মিথিলা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী। বাস্তববাদী একটা মেয়ে। অনেক বছর মেয়েটার সঙ্গে তার দাদা-দাদির যোগাযোগ ছিল না। একটা সময় দাদা-দাদির খোঁজ পায়, যে দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন (আবুল) হায়াত আঙ্কেল ও দিলারা (জামান) আন্টি। এমন একটি চরিত্রে অভিনয় বেশ উপভোগ করেছি। অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।

প্রশ্ন : এ সিনেমা দিয়ে কী বার্তা দিতে চেয়েছেন পরিচালক?

সুস্মি রহমান : আমি বলব, সন্তানদের বার্তা দিতে চেয়েছেন পরিচালক। আমরা সন্তানেরা অনেক সময় বুঝে না-বুঝে মা–বাবার সঙ্গে ভালো আচরণ করি না। এ ধরনের মানুষেরা পরে খারাপ কিছুর সম্মুখীন হন—সেই বার্তাই ছবিতে দিয়েছেন পরিচালক।

সুস্মি রহমান

 

প্রশ্ন : এখন তো প্রেক্ষাগৃহে খুব একটা দর্শক যাচ্ছে না। ছবিটির মুক্তির আগে প্রচার নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?

সুস্মি রহমান : আমরা প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করেছি। কোনো ত্রুটি রাখিনি। দর্শককে বলার চেষ্টা করছি, একটা ভালো ছবি বানিয়েছি, যেটার দারুণ একটা গল্প আছে। যে গল্পটা এ দেশের প্রতিটা মানুষেরই গল্প। পাশাপাশি দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ভয় বা খারাপ লাগা তো কাজ করছে। আমাদের ছবির নায়ক দেশে নেই, তাকে খুব মিস করছি। আমরা একসঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলাম। তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। সময়টাও দারুণ কেটেছিল আমাদের। সাইমন ভাই দেশে থাকলে ভালো হতো। আরও জমিয়ে প্রচারণা চালানো যেত।

প্রশ্ন : আপনি তো সিনেমা, নাটক, মডেলিং সব মাধ্যমে কাজ করেন? কোনটিতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি?

সুস্মি রহমান : ২০১০ সালে মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনচিত্রে শুরু। একটানা অনেক কাজ এই মাধ্যমে করেছি। পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেছি। ছবির কাজে আনন্দ পেয়েছি বেশি। সিনেমার কাজ নিয়েই এগোতে চাই। চলচ্চিত্রে কাজ করে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি।

প্রশ্ন : দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলেও ছবির সংখ্যা তো খুবই কম?

সুস্মি রহমান : আমি ‘বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরী’ প্রতিযোগিতায় ছিলাম। এরপর মডেলিং আর টিভি নাটকে কাজ করি। তবে সিনেমায় শুরু ২০১৮ সালে। ‘আসমানী’ নামের সেই ছবিটা ওই বছরই মুক্তি পায়। পরের বছরেই দায়মুক্তি সিনেমায় কাজ করি। এই ছবির শুটিংয়ের পর হঠাৎ মুটিয়ে যাই। তারপর ওজন কমানোর মিশনে নামি। ফিটনেস ফিরে পেতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়। সম্প্রতি শেষ করলাম ‘ময়নার চর’ নামে নতুন একটি ছবির, এতে আমার সহশিল্পী (মামনুন হাসান) ইমন ভাই।

প্রশ্ন : আপনার অভিনয়ের শুরু কীভাবে?

সুস্মি রহমান : আমার পরিবারে কেউ বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেনি। নিজের আগ্রহে কাজ শুরু করি। শুরুতে পরিবার বাধা দিয়েছিল। যখন আমার কাজ দেখা শুরু করল, তখনই আমার কনফিডেন্সে পরিবারের সবাইও আস্থা খুঁজে পেল। তা ছাড়া আমি এমন কোনো কাজ করি না, যার কারণে পরিবার কিংবা আমাকে সমালোচিত হতে হবে। তাই একটা পর্যায়ে বলল, বুঝেশুনে কাজ করো। নাটক খুব বেশি করিনি। একদম শুরুর দিকে সজল ভাইয়ার বিপরীতে ‘মুঠোফোন’ নামের একটা কাজ করেছিলাম, যা আমার ভীষণ পছন্দের। পরে ‘মেঘবালিকা’ নামের একটি সিরিয়ালের কাজ করেছিলাম। এটিও প্রিয় তালিকায় আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *