পিএসজির কাছে বিধ্বস্ত হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে মেসিদের বিদায়

মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে রোববার রাতের এই ম্যাচে মেসি ছিলেন মাঠে, ছিলেন তাঁর পুরনো সতীর্থ সার্জিও বুসকেটস, জর্ডি আলবারাও। কিন্তু তাতে কিছুই হলো না। খেলা শুরুর মাত্র ছয় মিনিটেই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে মায়ামি। এরপর একে একে আরও তিনবার জাল কাঁপায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।

এই ম্যাচেই মেসি মুখোমুখি হন সেই পিএসজির, যেখান থেকে একসময় অপমানিত হয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল তাকে। অনেকে ভেবেছিলেন হয়তো এটি হবে মেসির ‘রিভেঞ্জ ম্যাচ’—কিন্তু বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। হতাশাজনক পারফরম্যান্স, পেছনে ছুটে বেড়ানো আর গোল বাঁচাতে ব্যর্থতা—এই ছিলো ইন্টার মায়ামির রাত।

প্রথমার্ধেই ফয়সালা—এটাই হতে পারে এই ম্যাচের সবচেয়ে বড় সারসংক্ষেপ। মাত্র ছয় মিনিটেই হেডে গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দেন জোয়াও নেভেস। ৩৯ মিনিটে তারই দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। এরপর ম্যাচের ৪৪ মিনিটে আত্মঘাতী গোল করেন ইন্টার মায়ামির ডিফেন্ডার টমাস অ্যাভিলেস। আর অতিরিক্ত সময়ে চতুর্থ গোলটি করেন আশরাফ হাকিমি। ম্যাচের পর পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে বলেন, ‘আমরা প্রায় নিখুঁত একটি ম্যাচ খেলেছি। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, যদিও আরও উন্নতির জায়গা আছে।’

এই ম্যাচটি ছিল মেসির জন্য আবেগময়। কারণ ২০২৩ সালে যে পিএসজি থেকে বিতর্কিতভাবে বিদায় নিয়েছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেই এই প্রথম মাঠে নামেন। কিন্তু প্রতিশোধ নয়, ম্যাচটা হয়ে থাকল একতরফা দুঃস্মৃতির।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা সচল ছিলেন মেসি। একটি হেড ফিরিয়ে দেন দোন্নারুম্মা, আর শেষদিকে তার ফ্রি-কিক সরাসরি দেয়ালে বাধা পায়। গ্যালারিতে তখনো ভেসে আসে ‘মেসি! মেসি!’ স্লোগান, কিন্তু তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি ম্যাচের গতিপ্রবাহে।

সবচেয়ে কাছাকাছি সুযোগটা পেয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ, তবে পোস্টের কাছ থেকে শট না নিয়ে বল মিস করে বসেন। রাগে পানির বোতল লাথি মারেন—এই একটি দৃশ্যই যেন ইন্টার মায়ামির হাল দেখিয়ে দেয়।

ম্যাচ শেষে কোচ হ্যাভিয়ের মাচেরানো বলেন, ‘আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। আজ স্পষ্ট বোঝা গেছে দুই দলের পার্থক্য, তবে ফুটবল আমাদের সুযোগ দিয়েছিল বিশ্বের সেরা দলের মুখোমুখি হওয়ার।’

এদিকে পিএসজি উঠে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ফ্লামেঙ্গো ও বায়ার্ন মিউনিখের মধ্যকার বিজয়ী দল। আর মেসির জন্য—আরেকটি বড় মঞ্চে অপূর্ণতা, আর মায়ামির জন্য—অভিজ্ঞতার চেয়ে বেশি কিছু না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *