যোগের নির্দিষ্ট কিছু আসন, প্রাণায়াম ও শিথিলায়ন প্রাকৃতিকভাবে ফুসফুসকে শক্তিশালী করে ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বক্রাসন ও সেতুবন্ধানাসন শরীরে লসিকা প্রবাহ বাড়ায়, যা টক্সিন দূর করে এবং ইমিউন কোষগুলোর চলাচল বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
সেতুবন্ধানাসন মাটিতে চিত হয়ে শুয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে হাত ও পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে কোমর উঁচু করে করতে হয়। বক্রাসন মাটিতে বসে নির্দিষ্ট নিয়মে পর্যায়ক্রমে হাঁটু ভাঁজ করে হাত পেছনে রেখে মেরুদণ্ডে মোচড় দিয়ে করতে হয়।
ভুজঙ্গাসন ও মৎস্যাসন ফুসফুস ও বুক প্রসারিত করে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। মৎস্যাসনে চিত হয়ে শুয়ে হাতে ভর রেখে বুক ওপরে উঠিয়ে মাথার তালু মাটিতে স্পর্শ করাতে হয়, নিতম্ব না উঠিয়ে। ভুজঙ্গাসনে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে নাভি পর্যন্ত অংশ মাটিতে রেখে বাকি অংশ শ্বাস নিতে নিতে ওপরে উঠাতে হয়।
অনুলোম-বিলোম ও ভ্রামরী প্রাণায়াম প্যারাসিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেমকে সক্রিয় করে, স্ট্রেস কমায় ও প্রতিটি কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। ভ্রামরী প্রাণায়ামে বসে চোখ বন্ধ করে নির্দিষ্ট নিয়মে কানে আঙুল দিয়ে ভ্রমরের গুঞ্জনের মতো শব্দ করতে হয়। এতে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে রক্তনালি শিথিল ও প্রশস্ত হয়ে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে। ফলে শরীরের সব টিস্যুগুলোয় অধিক অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান পৌঁছায়।
অনুলোম বিলোম প্রাণায়ামে পর্যায়ক্রমে বসে থেকে এক নাক বন্ধ করে আরেক নাক দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। এটি অ্যাজমা ও অ্যালার্জি সমস্যা কমায়। অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে। শ্বাসতন্ত্রের পেশিকে শক্তিশালী করে।
করোনা আক্রান্ত অবস্থায় অক্সিজেন স্যাচুরেশন বাড়াতে যোগ থেরাপিস্টের পরামর্শে ধাপে ধাপে কিছু প্রাণায়াম ও এর মোডিফাইড রূপ যেমন, উপুড় হয়ে শুয়ে ডায়াফ্রেগমেটিক ব্রিদিং তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট নির্দিষ্ট আসন, প্রাণায়াম ও যোগ নিদ্রার মতো রিলাক্সেশন টেকনিকচর্চা করোনা মোকাবিলায় শরীর ও মনকে প্রস্তুত রাখবে।
তবে জ্বর থাকাকালীন সময়ে কঠিন অনুশীলন এড়িয়ে চলুন। শরীরের সামর্থ্য বুঝে চর্চা করুন। হার্ট বা ফুসফুসের রোগ থাকলে বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা থাকলে যোগ থেরাপিস্টের পরামর্শ নিন। সতর্কতা মেনে আজ থেকেই চর্চা শুরু করুন। নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।