গাজীপুরের টঙ্গীতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় মেজবাহ উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। পরে মাদ্রাসা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় মাদ্রাসার তিতুমীর হলে এ ঘটনা। জানা গেছে, মেজবাহ উদ্দিন আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত এ সংগঠনের কর্মকাণ্ডে আবারও সক্রিয় হচ্ছিলেন।
অভিযুক্তের সহপাঠী আলিম পরীক্ষার্থী আবির বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করে সে আমাদের শহীদ সহপাঠীদের অবমাননা করেছে। আমি ঘৃণা করি এমন একজনকে, যে শহীদ নাসির ইসলামের বিপক্ষে কথা বলে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি।
ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দিদারুল ইসলাম বলেন, জুলাই মাস আমাদের জন্য বেদনার স্মৃতি বহন করে। শহীদ নাসির ইসলামসহ তিনজন সহপাঠীকে আমরা এ মাসেই হারিয়েছি। অথচ মেজবাহ সেই শহীদদের অপমান করে মন্তব্য করেছে। এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিতুমীর হল সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত পদক্ষেপ নেই, যাতে কোনো ধরনের মব ভায়োলেন্স না ঘটে। আমরা তাকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে এনে মাঠে চুল কেটে প্রতিবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, পরে মাদ্রাসা প্রশাসন ও ছাত্রসংসদের যৌথ উদ্যোগে তাকে হোস্টেল সুপারের কার্যালয়ে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়।
মাদ্রাসার কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের জিএস সাইদুল ইসলাম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি এবং নিরাপত্তা বিবেচনায় আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই। পরে তাকে টঙ্গী পশ্চিম থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিফজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের অভিযোগ ছিল, সে রক্তাক্ত জুলাইয়ের শহীদদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আমরা তাকে পুলিশের কাছে তুলে দিই। এখন আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে আদালতে পাঠানো হবে।