বন্ধুর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করায় কুপিয়ে হত্যা

নিহত আশরাফুল ইসলাম বিপুল যশোর শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার আখতার হোসেনের ছেলে। তিনি এসিআই গ্রুপের ডিপো শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

নিহতের পিতা আখতার হোসেন জানান, হামলাকারী শহরের ষষ্ঠিতলা এলাকার বাপ্পী ও বিপুলের বন্ধু ছিলেন। বাপ্পী মাদক সেবন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় তার স্ত্রী সুমাইয়া তাকে তালাক দেয়। এরপর সুমাইয়া বিপুলের সাথে সম্পর্ক করে বিয়ে করে। এতে বাপ্পী ক্ষিপ্ত হয় এবং বিপুল ও সুমাইয়াকে হত্যার হুমকি দেয়। এরপর বিভিন্ন সময় বাড়ির সামনে বোমাবাজির ঘটনাও ঘটায়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। কৌশলে অন্য লোককে ফোন করে ডেকে নিয়ে বিপুলকে কুপিয়ে জখম করে বাপ্পী ও তার সহযোগীরা। স্থানীয়রা বিপুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করার কিছু সময় পর সে মারা যায়।

হাসপাতাল চত্বরে আহাজারি করতে দেখা যায় নিহত বিপুলের স্ত্রী সুমাইয়াকে। ৬ মাসের অন্ত:সত্ত্বা এই নারী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘বাপ্পী অনেক খারাপ ছেলে। তার সঙ্গে বনিবনা না থাকাতে আমাদের ডির্ভোস হয়। পরে বিপুলের সাথে পরিচয় হয়ে আমরা বিয়ে করি। বিয়ের পর বাপ্পী ও তার পরিবার বিভিন্ন সময়ে আমাকে উক্ত্যক্ত করতো। ফোন করে আজেবাজে কথা বলতো। কয়েক মাস আগে, আমার স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বোমাও মারে। সে সময় সে প্রাণে বেঁচে যায়। কয়েকবার থানাতে অভিযোগ দিলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি।

আহাজারি করে সুমাইয়া অভিযোগ করেন, কি হবে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে। তারা যদি ব্যবস্থা নিতো; তাহলে আমার স্বামীর প্রাণ দিতে হতো না। আমার পেটে সন্তানের কি হবে। আমাদের কি হবে। আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আমার আনাগত সন্তানের পিতার হত্যার বিচার চাই।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শাকিরুল ইসলাম জানান, বিপুলের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠানোর পর তিনি মারা যান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। হামলাকারী তথ্য নিয়ে অভিযান শুরু হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *