বর্তমান সময়ে আমরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা করি সম্ভবত আমাদের খাবারের দিকটাকেই। দেরিতে রাতের খাবার, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম, এটা-সেটা নাস্তা খেতে থাকা এবং কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার মাধ্যমে আমরা অজান্তেই নিজেদেরকে স্বাস্থ্যগত সমস্যার জন্য প্রস্তুত করছি। এর মধ্যে একটি হলো উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড। এটি গোপনে ধীরে ধীরে তৈরি হয় এবং একটা সময় অস্বস্তি শুরু হয়। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, যদি আপনি জানা থাকে যে কী খাবেন এবং কী এড়িয়ে যাবেন।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কী হয়?
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কেবল জয়েন্ট ব্যথাই বাড়ায় না, এটি কিডনিতে পাথর, জয়েন্টে ধারালো ইউরেট স্ফটিক, ফোলাভাব, ব্যথা অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা আমরা অনেকেই বিবেচনায় আনি না। ফলস্বরূপ ভুগতে হয় এ ধরনের সমস্যায়।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে কী খাবেন
১. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে। কমলা, আমলকি, আপেল, লেবু-যেকোনো টক স্বাদের ফল খেতে পারেন। সকালে আমলকির রস অথবা দুপুরে সাইট্রাস জাতীয় ফল সত্যিই কাজ করে।
২. কাঁচা পেঁপে
সামান্য সেদ্ধ কাঁচা পেঁপে কেবল হজম করা সহজ নয়- এটি পেপেইন দিয়ে পরিপূর্ণ। পেপেইন হলো একটি এনজাইম যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি প্রদাহের সময় বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি জয়েন্টগুলোকে কোমল করে।
৩. দারুচিনি
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পেলে বিপাকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হালকা গরম পানিতে এক চিমটি দারুচিনি মিশিয়ে খান অথবা ওটসের উপর ছিটিয়েও খেতে পারেন। এই ছোট অভ্যাসের রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা। বিশেষ করে যাদের ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার, তাদের জন্য দারুচিনি উপকারী।
৪. ব্ল্যাক কফি ও গ্রিন টি
এই পানীয়গুলোতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাটেচিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি এনজাইম নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। শুধু খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত যেন না খাওয়া হয়। দিনে এক থেকে দুই কাপ যথেষ্ট।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে যা খাবেন না
১. অ্যালকোহল এবং চিনিযুক্ত পানীয়
বিয়ার, হুইস্কি, চিনিযুক্ত ফিজি পানীয় সবই পিউরিন এবং চিনিযুক্ত। উভয়ই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রার জন্য খারাপ। এগুলোর বদলে ভেষজ চা বা তাজা ফলের রস খেতে পারেন। এতে কিডনিও ভালো থাকবে।
২. প্যাকেটজাত খাবার
৩. লাল মাংস এবং শেলফিশ
এগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই পিউরিন বেশি থাকে। নিয়মিত এ ধরনের খাবার খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও একইভাবে বৃদ্ধি পাবে। নিরাপদ খাবার খুঁজলে মুরগির মতো চর্বিহীন মাংস অথবা টফু বা ডালের মতো উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন বেছে নিন।